ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরমাণু বোমার মজুদ বাড়াচ্ছে চীন

প্রকাশনার সময়: ৩০ জুলাই ২০২১, ০১:০২

পরমাণু অস্ত্রের জন্য নতুন আরো ১১০টি ক্ষেপণাস্ত্র সাইলো নির্মাণ করেছে চীন। বেইজিংয়ের এমন পদক্ষেপে উদ্বেগ জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগনের কর্মকর্তা ও রিপাবলিকান দলের কংগ্রেস সদস্যরা।

সাইলো হলো একটি ভূগর্ভস্থ স্থাপনা, যেখানে বোমা বহনকারী নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ছোড়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়। এ খবর জানিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বলেছে, আমেরিকান ফেডারেশন অব সায়েন্টিস্টের (এএফএস) গত সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন তাদের সিনজিয়াং অঞ্চলের পূর্বে হামির কাছে সাইলোর একটি নতুন ক্ষেত্র নির্মাণ করছে, স্যাটেলাইটে এমন ছবি ধরা পড়েছে।

এর এক সপ্তাহ আগে জানা যায়, দক্ষিণপূর্বে আরো ৩৮০ কিলোমিটার দূরে ইউমেনে একটি মরু এলাকায় প্রায় ১২০টি সাইলো নির্মাণ করছে বেইজিং। গতকাল বুধবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েনডি শেরম্যানের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে আলোচনায় বসার আগে চীনের নতুন সাইলো নির্মাণের খবর এল।

এএফএসের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত খবরের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড এক টুইটার বার্তায় বলেছে, ‘দুই মাসের মধ্যে জনসাধারণের নজরে দ্বিতীয়বারের মতো ধরা পড়ল এ ঘটনা। যাকে আমরা বলতে পারি বিশ্বের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি এবং একে ঘিরে থাকা গোপনীয়তার চাদর।’

চলতি জুলাইয়ের শুরুতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর চীনের এই পরমাণু অস্ত্রের মজুদ বাড়ানোর পদক্ষেপকে উদ্বেগজনক আখ্যা দিয়ে বলে, বেইজিং পরমাণু অস্ত্রের ন্যূনতম মজুদ বজায় রাখার দীর্ঘদিনের নীতি থেকে দূরে সরে আসছে। এ সময় অস্ত্র প্রতিযোগিতা উস্কে দেয়ার ঝুঁকি কমাতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে চীনকে আলোচনায় বসার আহ্বানও জানিয়েছে তারা।

এ প্রসঙ্গে দেশটির অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পার্টির কংগ্রেস সদস্য মাইক টার্নার বলেন, ‘চীনের পরমাণু অস্ত্রের মজুদ উদ্বেগজনক। তারা এটাও স্পষ্ট করেছে যে, এগুলো মোতায়েন করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের মিত্রদের হুমকি দেয়ার জন্য।’ হাউজ আর্মড সার্ভিসেসের স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস উপকমিটির এই সদস্য আরো বলেন, ‘অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান চীন প্রত্যাখ্যান করায় আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ সৃষ্টি করেছে এবং সব দায়িত্বশীল দেশের উচিত এর নিন্দা জানানো।’

এ কমিটির আরেক সদস্য, রিপাবলিকান দলের মাইক রজার্স বলেন, চীনে অস্ত্রের মজুদ বাড়ানোর বিষয়টি এটাই নির্দেশ করছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু অস্ত্রের মজুদেরও দ্রুত আধুনিকায়নের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

একটি নতুন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে পৌঁছাতে আলোচনায় বসার জন্য বেশ কয়েকবার চীন ও রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন। তবে বেইজিংয়ের দাবি, তাদের পরমাণু অস্ত্রের মজুদ যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার তুলনায় নগণ্য। এবং কৌশলগত নিরাপত্তা নিয়ে তারা আলোচনায় বসতে তারা সম্মত। তবে এটি হতে হবে ‘সমতা ও পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে’।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে পেন্টাগনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের পরমাণু বোমার মজুদ সর্বনিম্ন অবস্থায় ২০০টির মতো। যেহেতু বেইজিং তাদের সামরিক বাহিনী আধুনিকায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে, তাই এ মজুদ দ্বিগুণ করা হতে পারে। পররাষ্ট্র দফতরের একটি ফ্যাক্ট-শিটের বরাতে বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভাণ্ডারে প্রায় তিন হাজার ৮০০ পরমাণু বোমা রয়েছে। যার মধ্যে ১ মার্চ পর্যন্ত মোতায়েন রয়েছে ১ হাজার ৩৫৭টি।

নয়া শতাব্দী/এসইউ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ