ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

মারিউপোলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া

প্রকাশনার সময়: ২১ মে ২০২২, ১৭:২৭

ইউক্রেনের আলোচিত মারিউপোল শহর দখল করার দাবি করেছে রাশিয়া। প্রায় তিন মাসের অবরোধের পরে শুক্রবার (২০ মে) ইউক্রেনের কৌশলগত এই বন্দর শহরটি দখলকে এখন পর্যন্ত যুদ্ধে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গত প্রায় তিনমাসে রুশ সেনারা এই শহরটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। শহরটির প্রায় ২০ হাজারের বেশি বেসামরিক লোক মারা যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মারিউপোল দখলের সংবাদ জানিয়েছেন।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ এ তথ্য জানিয়েছেন।

তবে ইউক্রেন থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এ তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তি মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে বলেছে, গত সোমবার থেকে স্টিল কারখানাগুলোতে আটকে থাকা মোট দুই হাজার ৪৩৯জন ইউক্রেনীয় যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছে।

শুক্রবারও ৫০০ জনেরও বেশি ইউক্রেনীয় যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছে। তারা আত্মসমর্পণ করার সঙ্গে সঙ্গে রুশ সেনারা ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের বন্দী করে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে কয়েকজনকে একটি প্রাচীন শাস্তি উপনিবেশে নিয়ে যায় এবং অন্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্টিল কারখানার প্রতিরক্ষার নেতৃত্বে ছিল ইউক্রেনের আজভ রেজিমেন্ট। রাশিয়া বরাবরই এই আজভ রেজিমেন্টকে ‘নব্য নাৎসি’ বলে অভিহিত করে আসছে।

রাশিয়া বলেছে, আজভ রেজিমেন্টের কমান্ডারকে একটি সাঁজোয়া যানে করে প্ল্যান্ট থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ যুদ্ধাপরাধের জন্য স্টিল কারখানার কিছু যোদ্ধাকে ‘নাৎসি’ এবং অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি আনার হুমকি দিয়েছে।

সামরিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, মারিউপোলের সম্পূর্ণ অধিগ্রহণ পুতিনকে ২৪ ফেব্রুয়ারিতে শুরু করা যুদ্ধে দেরিতে হলেও দুর্দান্ত একটি বিজয় এনে দিয়েছে।

শনিবার ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রুশ বাহিনী একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে গোলাবর্ষণ করেছে এবং ডনবাসের অংশ লুহানস্ক অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরে হামলা চালিয়েছে। এসময় তারা অন্যান্য স্থাপনার পাশাপাশি একটি স্কুলে আঘাত করেছে।

প্রসঙ্গত, ক্রেমলিন ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে দখল করা ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ ও রাশিয়ার মধ্যে একটি স্থল বন্দর প্রতিষ্ঠা করার জন্য মারিউপোলের নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিল। অন্যদিকে এই বন্দরটি হারানোর ফলে ইউক্রেন একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর হারাবে।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের সবচেয়ে খারাপ ফল ভোগ করেছে মারিউপোলবাসীরা। আনুমানিক এক লাখ অধিবাসী দেশ থেকে বিতারিত হয়েছে। অনেকে খাদ্য, পানি, তাপ বা বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণের মধ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলোর মধ্যে আটকা পড়েছে।

গত এপ্রিল মাসে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তোলা ছবিতে দেখা যায়, মারিউপোলের ঠিক বাইরে গণকবর বলে ধারণা করা হয়। স্থানীয় কর্মকর্তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ৯হাজার বেসামরিক লোককে কবর দিয়ে হত্যাকাণ্ড গোপন করার অভিযোগ করেছেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সোমবার বলেছেন, যোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে আজভস্টালের নিচের কয়েক মাইল সুড়ঙ্গ ও বাঙ্কার থেকে তাদের বাহিনীকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে মানবিক যুদ্ধবিরতির সময় শত শত বেসামরিক লোককে এখানকার প্ল্যান্ট থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ