ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদে তুরস্কের আপত্তি

প্রকাশনার সময়: ১৭ মে ২০২২, ১৯:২৪

ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়া নিয়ে কড়া ভাষায় ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের বিরোধিতা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান। ‘সন্ত্রাসবাদী’দের প্রতর্পনে এই দুই দেশের অসহযোগিতার কারণে ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্তি চান না তিনি।

ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিনল্যান্ড ও সুইডেন সামরিক জোট ন্যাটোয় যোগ দেবার উদ্যোগ শুরু করায় প্রায় সব সদস্য দেশ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত এই সামরিক জোটকে আরও মজবুত করবে এবং রাশিয়াকে ভবিষ্যৎ আগ্রাসন সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে বলে ন্যাটো মনে করছে।

বলা বাহুল্য, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখছেন না। শীতল সম্পর্কের অশনি সংকেত হিসেবে তিনি ফিনল্যান্ডে রাশিয়া থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। সরাসরি বিরোধিতা না করলেও রাশিয়ার দোরগড়ায় ন্যাটোর উপস্থিতি আরও জোরালো হলে পালটা পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করছে ন্যাটোর সদস্য দেশ তুরস্কও। সেই আপত্তির সঙ্গে বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার কোনো সম্পর্ক নেই। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দোহাই দিয়ে এমন কড়া মনোভাব দেখাচ্ছেন। তুরস্কের ‘শত্রু’ কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী ও গ্যুলেন গোষ্ঠীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না এবং ‘সন্ত্রাসবাদীদের’ প্রত্যর্পণের লক্ষ্যে তুরস্কের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ করেছেন এর্দোয়ান। ফলে তিনি এই দুই দেশের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। সুইডেন এর্দোয়ানের অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, যে দেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়ে থাকে।

ন্যাটোর ৩০টি সদস্য দেশ একমাত্র সর্বসম্মতিক্রমেই নতুন কোনো দেশকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। শুধু সরকার নয়, সেই লক্ষ্যে সংসদেরও অনুমোদনের প্রয়োজন। ফলে তুরস্কের আপত্তি ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোর সদস্যপদ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ছে। এই দুই দেশ আঙ্কারায় প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে অস্বস্তি দূর করার উদ্যোগ নিলেও এর্দোয়ান ‘অযথা সময় নষ্ট' না করার কথা বলেছেন।

ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ সপ্তাহান্তে বলেছিলেন, তুরস্ক স্পষ্ট করে দিয়েছে, যে সে দেশ মোটেই ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করবে না। সোমবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুশোলুর সঙ্গে আলোচনার পর তিনি বলেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে তুরস্কের নিরাপত্তা সংক্রান্ত আপত্তির কারণ অবশ্যই বিবেচনা করা হবে। তবে এমন ‘ঐতিহাসিক’ মুহূর্তে তিনি একজোট হবার প্রয়োজনিয়তারও উল্লেখ করেন। শেষ পর্যন্ত তুরস্কের আপত্তি যাতে ভেটো শক্তি প্রয়োগ পর্যন্ত না গড়ায়, সেই লক্ষ্যে ন্যাটোর মধ্যে আরও কূটনৈতিক উদ্যোগ দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর্দোয়ান সরকারের অনেক কার্যকলাপই ন্যাটোর বাকি সদস্য দেশ ভালো চোখে দেখে না। বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ দমনের দোহাই দিয়ে কুর্দি জনগোষ্ঠীর উপর নিপিড়নের অভিযোগ সেই সংশয় বাড়িয়ে দিয়েছে। তুরস্কের পিকেকে এবং সিরিয়ার ওয়াইপিজি কুর্দি গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে তুরস্ক। রোববার বার্লিনে ন্যাটো পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে মেভোশুলু সামরিক জোটের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অকারণে তুরস্ককে অস্ত্র সরবরাহ সীমিত রাখা হচ্ছে।

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ