ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

থাইল্যান্ডের রাস্তা দখলে নিলো বানর গ্যাং

প্রকাশনার সময়: ২৭ জুলাই ২০২১, ১৯:৫৪

মধ্য থাইল্যান্ডের লোপবুরি শহরের এক ব্যস্ত সড়কে সম্প্রতি বানরের দুই পক্ষের মারামারিতে কিছুক্ষণের জন্য থমকে ছিল রাস্তার জনজীবন। উপস্থিত জনতার বিস্ময়ের মুখেই দুই বানর গ্যাং-এর ধস্তাধস্তির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সাড়া জাগিয়েছে দ্রুত।

সাধারণত দর্শনার্থীদের দেওয়া খাবারদাবাড়ে ভালোই চলে যেতো লোপবুরি শহরের বানর সমাজের। কিন্তু করোনাকালে শহরে দর্শনার্থী কমে যাওয়ায় খাদ্য সংকটে ভুগছে বানররা। ধারণা করা হচ্ছে, রাস্তায় ঘটে যাওয়া সেই ধস্তাধস্তির মূলে ছিল খাবার সংকট।

প্রথমে প্রাচীন এক বুদ্ধ মন্দিরের সামনে বানরের এই দুই পক্ষকে জড়ো হতে দেখা গিয়েছিল। এরপর এক পক্ষ অপর পক্ষকে ধাওয়া করলে পার্শ্ববর্তী রাস্তায় গিয়ে গড়ায় এই দুই গ্যাং-এর বাহাস। সেখানে দুই পক্ষ মারামারি আরম্ভ করলে ব্যস্ত সড়কের দুই পাশে যানজট দেখা দেয়। এই বাহাস চলাকালে উপস্থিত চালকরা তাদের গাড়ি থামিয়ে প্রায় চার মিনিটের মতো অপেক্ষা করেছে।

বানরের দুই পক্ষের মাঝখানে একটি দৃশ্যমান ফারাক ছিল। ধস্তাধস্তি শুরুর আগে কিছু সাহসী বানরকে এই ফাঁকাস্থানে এসে প্রতিপক্ষকে প্ররোচিত করার চেষ্টা করতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী ইলিফাত বলেন, "বানরের চেঁচামেচি যখন শুনি, তখন আমি মন্দিরের পাশে একটি বিল্ডিংয়ে ছিলাম। অনেকগুলো বানর একসাথে দাঁড়ানো ছিল। ওরা যে তর্কাতর্কি করছে, সেটা দেখাই যাচ্ছিল। এরপর তারা রাস্তায় নেমে মারামারি আরম্ভ করে দিলো।"

ধারণা করা হচ্ছে, এই দুই পক্ষের এক পক্ষ মন্দিরের আশেপাশেই বসবাস করে, যেখানে দর্শনার্থীরা সাধারণত তাদের খাবারের ব্যবস্থা করে থাকে। অপর পক্ষ বাস করে একটি পরিত্যক্ত সিনেমা হলে।

গতবছর মার্চে খাবারকে কেন্দ্র করেই প্রায় একইরকম একটি ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছিল। সেবার রেললাইনের দুই পাশ থেকে বানরের দুটি বিশাল 'গ্যাং' বাহাসে জড়িয়েছিল।

রাজধানী ব্যাংককের ১০০ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত এই শহর মহামারির আগে দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে সরব ছিল। দর্শনার্থীরাই সাধারণত বানরের এই বিশাল জনসংখ্যার খাবারের যোগান দিতো। মহামারির সময়ে অভ্যন্তরীণ দর্শনার্থী ও স্থানীয়রা কোনোভাবে বানরদের খাবার জুগিয়ে আসলেও এই মাসের শুরুতে কর্তৃপক্ষ কঠোর লকডাউন জারি করায় আবারও খাদ্য সংকটে ভুগছে বানররা।

এই অঞ্চলে বানরের সংখ্যা কমাতে কর্তৃপক্ষ গণ-বন্ধাকরণ প্রকল্পও পরিচালনা করেছে। থাইল্যান্ডের সরকারী পশু-চিকিৎসক সুপাকার্ন কায়চোট জানান, "টুরিস্টরা এসে খাওয়াবে, এটাতেই অভ্যস্ত এখানকার বানররা। এই শহর আসলে তাদেরকে নিজেদের জন্য কিছু করার মতো জায়গা রাখেনি। যে কারণে টুরিস্ট না থাকায় ওরা অনেক আক্রমণাত্মক হয়ে গেছে।"

লোপবুরি শহরের জনগণ সাধারণত বিশ্বাস করে শহরে এতো বানর থাকায় তারা ভাগ্যবান। বানরের এই বিশাল জনসংখ্যাকে সম্মান জানিয়ে প্রতিবছর একটি উৎসবও পালন করেন তারা। সূত্র: ডেইলি মেইল।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ