২৬ বছর বয়সী রাধিকা গুপ্তা। মাত্র দুই মাস আগে বিয়ে হয় তার। নতুন বউ হিসেবে যান স্বামীর বাড়িতে। সেখানে বন্দুক দেখার পর শখ হয় থুতনির সঙ্গে নল ঠেকিয়ে তুলবেন ছবি। তাও আবার সেলফি। দারুণ উৎসাহ নিয়ে প্রস্তুতিও নেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, ট্রিগারে চাপ পড়ে বন্দুকের গুলিতে উড়ে যায় তার মাথা-মগজ। মারা যান তিনি, থেকে যায় শেষবারের মতো তোলা ছবিটি।
ভারতের উত্তর প্রদেশের হারদুই অঞ্চলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, এক হাতে মোবাইল ক্যামেরা অন্যহাতে বন্দুকের ট্রিগার ছিল তার। এই সময় অসতর্কতাবশত ট্রিগারে আঙ্গুলের চাপ লাগায় গুলি বেরিয়ে যায়। পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জে বের হওয়া গুলি তার গলা ও ঘাড় ছিদ্র করে বেরিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাধিকার শ্বশুর রাজেশ গুপ্তা জানান, তার ছেলে আকাশ গুপ্তার সাঙ্গে রাধিকার বিয়ে হয় চলতি বছরের মে মাসে। শহরে তাদের ছোট গহনার দোকান আছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য তাদের ১২-বোর একনলা বন্ধুকটি থানায় জমা রাখা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার আকাশ সেটা বাড়িতে ফেরত আনে। বন্দুকটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ছিল। বিকেল ৪টার দিকে আমরা গুলির প্রচণ্ড শব্দ শুনতে পাই। দৌড়ে উপরে যাই। দেখি রাধিকা রক্তে ভাসছে। গুরুতর আহত। বন্দুক হাতে নিয়ে সে মেঝেতে পড়ে আছে। সামনে তার মোবাইল দেখতে পাই যা সেলফি তোলার জন্য রাখা ছিল। আমরা দ্রুতই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই কিন্তু তাকে বাঁচাতে পারিনি।
পুলিশ বন্দুক ও মোবাইল ফোনটি জব্দ করেছে। এরই মধ্যে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ভিকটিমের ফোন থেকে একটি ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে যা তার মৃত্যুর সম্ভবত কয়েক সেকেন্ড আগে তোলা হয়েছিল।
পুলিশ এই ঘটনায় রাধিকার স্বামী আকাশকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আকাশ জানান, তার স্ত্রী বন্দুক দেখার পর থেকেই ব্যাপক উৎসাহ দেখাচ্ছিল। সে বন্দুক পাশে রেখে বেশ কয়েকটি ছবিও তুলেছিল। আরও ছবি তোলার জন্য উদগ্রীব ছিল। কিন্তু সেলফি তোলার একপর্যায়ে অসতর্কতায় ট্রিগারে আঙ্গুলের চাপ পড়ে গুলি বেরিয়ে যায়।
এদিকে রাধিকার বাবা তার মেয়ের আকস্মিক মৃত্যুতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি থানায় অভিযোগ দায়েরে বলেছেন, স্বামীর বাড়ির লোকজনই যৌতুকের জন্য রাধিকাকে খুন করেছে।
পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফরেনসিক রিপোর্টের পর এই ঘটনার সম্পর্কে তারা আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ