ঢাকা, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

এই মুহুর্তে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ৩০০ কোটি ডলার 

প্রকাশনার সময়: ১০ এপ্রিল ২০২২, ১০:১৯

ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে দেশটির ৩০০ কোটি ডলার সহায়তা প্রয়োজন। এই অর্থ দিয়ে জ্বালানি ও ওষুধসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহের গতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে বলে শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী। ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার এই দ্বীপরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থান দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ওষুধ, জ্বালানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবি আরো জোরালো হয়ে উঠছে। বিভিন্ন স্থানে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ চলছে।

চলতি সপ্তাহে নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আলি সাবরি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া তার প্রথম সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এটি একটি কঠিন কাজ। চলতি মাসেই আন্তর্জাতিক আর্থিক তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি। আন্তর্জাতিক বন্ড পুনর্গঠন করার চেষ্টা করছে শ্রীলঙ্কা। অর্থ প্রদানের ওপর একটি স্থগিতাদেশ চাইবে দেশটি এবং জুলাই মাসে আসন্ন ১০০ কোটি ডলার অর্থ প্রদানের জন্য বন্ডহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়েও আত্মবিশ্বাসী তারা। দেশটির সরকার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বিশ্ব ব্যাংক এবং চীন, যুক্তরাষ্ট্র, বিট্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অংশীদার দেশগুলোর কাছেও সহায়তা চাইবে বলে জানানো হয়েছে। আলি সাবরি বলেন, আমরা জানি যে, আমরা কিসের মধ্যে আছি। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র উপায় লড়াই করে যাওয়া। আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। দেশটিতে মার্চে খাবারের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছেই। পর্যটন খাতের ওপর নির্ভরশীল দেশটিতে জীবনযাত্রার ব্যয় অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। ভারত, চীন ও বাংলাদেশ থেকে ঋণ নিয়েছে নগদ অর্থ সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা। এছাড়া ২০২১ সালের জুনে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকে ১০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা চীনের কাছে ঋণ পুনর্নির্ধারণের আবেদন জানায়। ফেব্রুয়ারিতে দেশটি ভারতের কাছ থেকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে তেল কেনার জন্য। তাছাড়া ৮ মার্চ ভারত শ্রীলঙ্কাকে আরো একশ’ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেয়। এদিকে, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটির বৈদেশিক রিজার্ভ ছিল মাত্র ২৩১ কোটি ডলার। চলতি বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কায় খাবারে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ২ শতাংশে। ২০১৯ সালে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ছিল এক দশমিক চার শতাংশ। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে শ্রীলঙ্কার বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ৭০ শতাংশ কমে গেছে। ফলে কলম্বো বাধ্য হয়েছে মুদ্রার মূল্য কমাতে এবং বৈশ্বিক ঋণদাতাদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে। হিমশিম খাচ্ছে জরুরি খাদ্য ও জ্বালানি আমদানিতে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, সপ্তাহান্তে জ্বালানি তেলের জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্তত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। রান্নার জ্বালানি গ্যাসের দাম এক হাজার ১৫০ রুপি থেকে বেড়ে চার হাজার ছাড়িয়েছে। শিশুখাদ্য গুঁড়ো দুধ বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। অর্থের অভাবে কাগজ ছাপা বন্ধের ফলে কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে সরকার।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ