ঢাকা, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বন্দী রুশ সেনাকে গুলি করে হত্যার ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশনার সময়: ০৮ এপ্রিল ২০২২, ০২:২৬

ইউক্রেনীয় বাহিনী বন্দী রুশ সেনাকে গুলি করে হত্যা করছে- এমন একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। এটি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পশ্চিমে একটি রাস্তায় ধারণ করা হয়েছে। ওই এলাকা থেকে রাশিয়ান বাহিনী পিছু হটছে।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা জানান যে, তিনি ভিডিওটি সম্পর্কে অবগত ছিলেন। ‘এটি অবশ্যই তদন্ত করা হবে’ বলেন তিনি।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, চারজন মাটিতে পড়ে আছে এবং তাদের একজনের হাত পিঠে বাঁধা। তিনজন নড়ছেন না কিন্তু একজনকে জীবিত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে এবং মারাত্মকভাবে আহত হলেও শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।

গুলিবিদ্ধ একজন লোক বলছে, ‘তাকে ছেড়ে দাও’। অন্য একজন উত্তর দেয় ‘আমি তাকে ছেড়ে যেতে চাই না’। তারপর একজন সৈনিক (যার মুখ ভিডিওতে দেখা যায় না) তাকে বেশ কয়েকবার গুলি করে যতক্ষণ না সে নড়াচড়া বন্ধ করে।

এ সময় পড়ে থাকা অন্য সৈন্যদের প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য ভিডিওটি চারপাশে ঘুরানো হয়। সবগুলো লাশের পরনে মিলিটারি পোশাক ও রক্ত ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ওই লোকদের মধ্যে কেবল একজনের মুখ দেখা যায় - বাকি তিনজন রাস্তায় মুখ থুবড়ে পড়ে থাকায় তাদের চেহারা দেখা যায়নি।

যেখানে ধারণ করা হয় ভিডিওটি

বিবিসি ভিডিওটি বিশ্লেষণ করেছে। তারা জানায়, ঘটনাটি কিয়েভের পশ্চিমে দিমিত্রিভকা শহরের বাইরের প্রধান সড়কে। ওই সড়কটি রাস্তাটি দিমিত্রিভকা শহরকে ইরপিন ও বুচার সঙ্গে যুক্ত করেছে।

ভিডিওতে দেখানো দৃশ্যগুলো ওই এলাকার গুগল স্ট্রিট ভিউয়ের দৃশ্যের সঙ্গে মিলে যায়। তবে ঠিক কোন দিন ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারেনি বিবিসি। ছায়ার অবস্থান দেখে বুঝা যায় এটি বিকেলের ঘটনা।

৩১ মার্চ একই রাস্তার তোলা একটি স্যাটেলাইট ছবিতে রাস্তায় রক্তের দাগ ও সাঁজোয়া যান দেখা যায়। ভিডিওটির প্রথম ৩০ মার্চ সকালে পোস্ট করা হয়েছিল। যার অর্থ এটি ২৯ মার্চ বিকেলে বা তার আগের।

নিহতরা কী রাশিয়ান সেনা?

ভিডিও চলাকালীন যা বলা হয়েছে তা থেকে মূল সূত্র পাওয়া যায়। সেখানে লাশের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একজন সৈন্য বলেছেন, ‘এখানে তারা, রাশিয়ান সেনাবাহিনীর হয়ে লড়েছেন।’

এছাড়াও ভিডিওটিতে একটি সাঁজোয়া যান রয়েছে। যেখানে ‘V’ চিহ্ন আঁকা রয়েছে। সাধারণত এ চিহ্ন দ্বারা রাশিয়ান সৈন্যদের যানবাহনকে চিহ্নিত করা হয়।

রাস্তায় পড়ে থাকা দুজনের পরনে সাদা বাহুবন্ধনী রয়েছে। যা দেখে তাদের ইউক্রেন হামলায় অংশ নেওয়া রাশিয়ান সৈন্য বলে শনাক্ত করা হয়। লাল ও কমলা রংয়ের বাহুবন্ধনীও ব্যবহার করা হয়েছে। এমনও খবর পাওয়া গেছে যে, কিছু এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের সাদা বাহুবন্ধনী পরতে উৎসাহিত করা হয়েছে।

রুশ সেনা হত্যায় যারা জড়িত

কিছু সেনার সামরিক পোশাকে নীল বাহুবন্ধনী ও ইউক্রেনীয় পতাকার ছাপ দেখা যায়। যা সাধারণত ইউক্রেনীয় বাহিনী ব্যবহার করে। কিন্তু এটি তাদের পরিচয় প্রমাণের জন্য যথেষ্ট নয়।

ভিডিওতে শোনা যায় সৈন্যরা সবাই রাশিয়ান ভাষায় কথা বলছে, এ ভাষা ইউক্রেনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ভিডিওর মাঝামাঝি পর্যায়ে একজন সৈন্যের মুখ স্পষ্টভাবে দেখা যায়। যার মুখে দাঁড়ি রয়েছে। ভিডিওটিতে আরো কয়েকজন সৈন্যের মুখ স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

বিবিসি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মুখ মেলানোর চেষ্টা করে। এতে একজন জর্জিয়ান ব্যক্তির সঙ্গে চেহারার মিল পাওয়া যায়। যার সঙ্গে ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় বিবিসি তার নাম প্রকাশ করেনি।

ক্যামেরাটি দাড়িওয়ালা লোকটির দিকে তাক করার সঙ্গে সঙ্গে অন্য একজনকে ইউক্রেনের জাতীয় স্যালুট ‘গ্লোরি টু ইউক্রেন’ চিৎকার করতে বলতে শোনা যায়। যার উত্তরে দাড়িওয়ালা লোকটি ‘ গ্লোরি ‍টু হিরোস’ বলেন।

প্রথম ব্যক্তি তখন উত্তেজিতভাবে চিৎকার করে ‘গ্রুজিনি’ (যদিও অডিওটি স্পষ্ট নয়) বা এধরনের কিছু একটা বলতে শোনা যায়। রাশিয়ান ভাষায় যার অর্থ জর্জিয়ান।

অডিওটি শেষ হয় একজন লোকের কথা দিয়ে। যিনি বলছিলেন, ‘আমাদের দেশে আসবে না’। সূত্র: বিবিসি

নয়া শতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ