শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকটে সৃষ্ট উত্তেজনায় কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে দেশটির সরকার। রাস্তায় আন্দোলন করছে সাধারণ মানুষ। এরই মধ্যে দেশটির পুরো মন্ত্রীসভা পদত্যাগ করেছে। পুনরায় নিয়োগ পাওয়া চার মন্ত্রীর মধ্যে অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আলি সাবরিও একদিনের মাথায় পদত্যাগ করেছেন।
এবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান সংকটের মধ্যেই নরওয়ে, ইরাক ও অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাস সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তবে দেশটির এমন সিদ্ধান্তের কারণ জানা যায়নি।
এদিকে, অন্তত ৪১ জন আইনপ্রনেতা জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর মঙ্গলবার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের ক্ষমতাসীন জোট।
সোমবার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের একটি ঐক্য সরকারে যোগদানের আমন্ত্রণকে অযৌক্তিক বলে প্রত্যাখান করেছে বিরোধীরা। এর পরিবর্তে দেশের খাদ্য, জ্বালানী ও ওষুধের ক্রমবর্ধমান ঘাটিতির জন্য সরকারের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে বিরোধীরা।
যে কারণে শ্রীলঙ্কায় দুর্গতি
দুই কোটি জনসংখ্যার এই দেশটিতে নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দামে বিপর্যস্ত জনজীবন। আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি, দুর্বল সরকারি অর্থব্যবস্থা এবং করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি দেশটির এই বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ।
এতে লঙ্কান সরকারের অন্যতম রাজস্ব আয়ের খাত পর্যটনশিল্প ধসে পড়েছে, রেমিট্যান্স পৌঁছেছে তলানিতে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ নেমে এসেছে দুই বিলিয়ন ডলারে।
গত কয়েক বছর শ্রীলঙ্কার রাজনীতি বেশ টালমাটাল ছিল। এই অবস্থায় দেশটির বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে। ২০২০ সালে শুরুর দুই মাসে রিজার্ভ ৭০ শতাংশ কমে যায়।
ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় দুই দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারে! শুধু তা-ই না, বছরের বাকি সময়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিতে হয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকারকে।
প্রায় ৫১ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ মেটানোর জন্য রিজার্ভের ডলার বাঁচাতে ২০২০ সালের মার্চ থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় শ্রীলঙ্কা সরকার। এরপর থেকেই দেশটিতে সংকট বাড়তে থাকে।
এসব সংকটের জন্য প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতিকে দায়ী করছেন বিক্ষোভকারীরা।
নয়া শতাব্দী/এস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ