মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পর এবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মস্কো। সে সঙ্গে ট্রুডোর মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ কয়েকজন সদস্যসহ মোট ৩১৩ জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এর আগে জো বাইডেনসহ যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় রাশিয়া।
এখন থেকে তাদের সবার রাশিয়ায় প্রবেশ বন্ধ। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ কানাডীয়দের এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। খবর দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের।
পুতিন সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রাশিয়াবিদ্বেষী’ কানাডীয় শাসকদের নিষেধাজ্ঞার জবাবে এই ব্যবস্থা নিয়েছে মস্কো। রাশিয়ার কালো তালিকায় ট্রুডো ছাড়াও নাম রয়েছে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী অনিতা আনন্দসহ দেশটির পার্লামেন্টের প্রায় প্রত্যেক সদস্যের।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রুশ কূটনৈতিক মিশনের ওপর আক্রমণ, আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়া বা দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছেদকারী অটোয়ার ‘রাশিয়াবিদ্বেষী প্রত্যেক জঘন্য ব্যক্তি’ অনিবার্যভাবে সমান জবাব পাবে।
ইউক্রেন আগ্রাসনের কারণে মস্কোর ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে কানাডা অন্যতম। এ কারণে গত সপ্তাহে মস্কো প্রকাশিত ‘শত্রুভাবাপন্ন’ ৪৮টি দেশের তালিকায় নাম ছিল তাদেরও।
ট্রুডো প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কিছুক্ষণ আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া।
বিবিসি-সিএনএনের খবর অনুসারে, রাশিয়ার ওপর অভূতপূর্ব নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় ১৫ মার্চ থেকে মস্কোর ‘স্টপ লিস্ট’-এ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান, সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নসের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আরও কিছু সুপরিচিত ব্যক্তির ওপর রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
রশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রুশ বাহিনী। গত ২০ দিনে তাদের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর। প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকশ বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ আক্রমণের মুখে এরই মধ্যে ৩০ লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছেন।
ইউক্রেনে আগ্রাসনের জবাবে পশ্চিমা দেশগুলো সরাসরি সংঘাতে না জড়ালেও একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রুশ অর্থনীতির কোমর ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে। রাশিয়া থেকে তেল, গ্যাস, কয়লা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো মস্কোর ওপর একাধিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
জবাবে ইউরোপে গ্যাস রফতানি বন্ধ করাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল রাশিয়া। তারই ধারাবাহিকতায় ‘শত্রুভাবাপন্ন’ দেশগুলোর ওপর পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া শুরু করেছে মস্কো।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ