ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

করোনায় নয় বিশ্বে বেশি মৃত্যু দূষণে : জাতিসংঘ

প্রকাশনার সময়: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০২:০৬

করোনায় নয় বিশ্বেজুড়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে পরিবেশ দূষণে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা নিয়ে মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে দূষণের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্র ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করছে জাতিসংঘ।

আগামী মাসে এটি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় কাউন্সিলের সভায় এটি উপস্থাপন করা হবে। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ প্রাপ্তি মানুষের অন্যতম অধিকার বলে ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল।

বিশ্ববাসীকে সতর্ক করে দিয়ে জাতিসংঘ বলছে, এমন মৃত্যু ঠেকাতে নির্দিষ্ট কিছু বিষাক্ত রাসায়নিক নিষিদ্ধ করতে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষি খাতে ব্যবহার হওয়া কীটনাশক, প্লাস্টিক ও ইলেকট্রনিক বর্জ্য বিশ্বজুড়ে মানুষের মৃত্যুর বড় কারণ। প্রতি বছর এসব কারণে প্রায় ৯০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু হয়। অন্যদিকে মহামারি করোনাভাইরাসে সারা বিশ্বজুড়ে ৫৮ লাখ ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

করোনার চেয়ে দূষণে বেশি মানুষের মৃত্যুর বিষয়টি বিভিন্ন মহলে খুব কম আলোচনা হয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

প্রতিবেদনে পলিফ্লোরালকিল ও পারফ্লোরালকিল নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ। মানবসৃষ্ট এসব উপাদান গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার হওয়া সরঞ্জাম (বিশেষত নন-স্টিক তৈজসপত্র) তৈরিতে ব্যবহার হয়। এই রাসায়নিক উপাদান মানবদেহে ক্যানসারের অন্যতম কারণ। একই সঙ্গে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার হওয়া জায়গাগুলো দ্রুত ও কার্যকর উপায়ে পরিচ্ছন্ন করার ওপর প্রতিবেদনে জোর দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বিশ্বজুড়ে নদীতে ফেলা ওষুধ ও অন্যান্য ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের বর্জ্যের কারণে সৃষ্ট দূষণ পরিবেশ ও বিশ্বস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অপর এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্ক এ গবেষণা চালিয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব বর্জ্যের মধ্যে প্যারাসিটামল, নিকোটিন, ক্যাফেইন, মৃগী ও ডায়াবেটিসের ওষুধের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে পাকিস্তান, বলিভিয়া ও ইথিওপিয়ার নদীগুলো বেশি দূষিত। এসব দেশের নদীতে সরাসরি ওষুধ ও অন্যান্য ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের বর্জ্য গিয়ে পড়ে। প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স জার্নালে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণায় শতাধিক দেশের এক হাজারের বেশি পরীক্ষামূলক স্থান থেকে পানির নমুনা নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নমুনা সংগৃহীত ২৫৮টি নদীর এক-চতুর্থাংশের বেশি নদীর পানিতে ফার্মাসিউটিক্যাল বর্জ্যের সক্রিয় উপস্থিতির মাত্রা এমন পরিমাণে পাওয়া গেছে, যা জলজ প্রাণীর জন্য অনিরাপদ।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া ড. জন উইলকিনসন বিবিসি নিউজকে বলেন, ‘সাধারণত যা ঘটে তা হলো, আমরা এ ওষুধ হিসেবে রাসায়নিকগুলো সেবন করি, সেগুলো আমাদের ওপর কাঙ্ক্ষিত কিছু প্রভাব ফেলে এবং তারপর সেগুলো আমাদের দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। তবে এখন নদী বা হ্রদের পানিতে মেশার আগে দূষিত পানির মধ্যে থাকা যৌগকে আধুনিক বর্জ্য পানি শোধনাগারগুলোও পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারছে না।’

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ