ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বদলে যাচ্ছে ত্রিপুরার শিক্ষা ব্যবস্থা

প্রকাশনার সময়: ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ১০:০০

স্কুল পর্যায়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাস-ফেল প্রথা চালু না থাকায় একটি অংশের কাছে শিক্ষার মান একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকতে শুরু করে। দীর্ঘ বাম জমানায় যে বিষয়কে আড়াল করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে আমূল পরিবর্তনের কথা ভাবতে শুরু করে বিজেপিশাসিত জোট সরকার। ক্ষমতাগ্রহণের পরপরই স্কুলপর্যায়ে ফিরিয়ে আনা হয় পাম-ফেল প্রথা। শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে আনা হয় এনসিইআরটি পাঠ্যক্রমও। উদ্দেশ্য, ভারতের অন্য রাজ্যগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক বিভিন্ন পরীক্ষায় ত্রিপুরার ছাত্র-ছাত্রীদের যেন আর পিছিয়ে না থাকতে হয়।

রাজ্য বিজেপি বলছে, দীর্ঘ ২৫ বছরের বাম জমানায় শিক্ষা দপ্তরকে যেসব দিক দিয়ে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিল, সেভাবে এগোয়নি। কিছু ক্ষেত্রে আংশিক উদ্যোগ নেওয়া হলেও এর ফল নেই বললেই চলে। ত্রিপুরাকে মডেল রাজ্য হিসেবে গড়ে তুলতে গিয়ে এখন সেই আংশিক কিংবা একেবারে উদ্যোগ না নেওয়া ক্ষেত্রগুলোতে হাত লাগিয়েছে শিক্ষা দপ্তর।

২৫ বছরের পরিবর্তে ক্ষমতার মাত্র ৩৫ মাসেই নতুন সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চালু করেছে এনসিইআরটি সিলেবাস। ৩০ হাজার শিক্ষককে এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির ৩ লাখ ২৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর মৌলিক বুনিয়াদি শিক্ষার ঘাটতি দূর করতেও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

প্রদেশ বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ সুনিত সরকার জানিয়েছেন, এ প্রকল্পে মোট ৯৭ হাজার ৫০০ জন ছাত্র-ছাত্রীর বুনিয়াদি শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও ৪ হাজার ৪০০টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি, মূল্যায়ন ও ফলাফলে একই মানদণ্ড বজায় রাখতে ষান্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি থেকে শুরু করে ছাপানোর কাজও সম্পূর্ণ গোপনীয়তার সঙ্গে করা হচ্ছে।

তিনি জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের মূল্যবান সময়ের কথা ভেবে ‘বছর বাঁচাও’ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় যারা সর্বোচ্চ দুটি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ার পর পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের জন্য অপেক্ষা করতো, এখন থেকে তাদের আর এক বছর অপচয় করতে হবে না। মাত্র দু-মাসের মধ্যেই আবার পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা।

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ কয়েকদিন আগে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এ ধরনের ‘ঐতিহাসিক’ সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে।

তার কথা অনুসারে, সরকার ‘সুপার ৩০’র মতো একটি বিশেষ প্রকল্পও নিয়েছে নতুন করে। এ প্রকল্পে ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিক্যাল এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য রাজ্য সরকার মাধ্যমিক পরীক্ষায় শীর্ষস্থান পাওয়া ৩০ জন শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ের ব্যবস্থা করছে। এছাড়া সর্বভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্যেও একটি ‘লক্ষ্য’ প্রকল্পের অধীনে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের ১ লাখ ২০ হাজার রুপি আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সরকার কম বয়সী শিশুদের সকাল সকাল বিদ্যালয়ে ছুটতে যেন অসুবিধা না হয়, সেজন্য সময়সূচিতেও পরিবর্তন এনেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে আরও বেশি সময় দিতে বিদ্যালয়ের সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছে।

নয়া শতাব্দী/এস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ