ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

৩০ বছর পর মিটল সৌদি-থাইল্যান্ড বিবাদ

প্রকাশনার সময়: ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:৩৪

চুরি যাওয়া হীরা-জহরত এবং ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৩০ বছর ধরে বিবাদ চলছিল সৌদি আরব ও থাইল্যান্ডের মধ্যে। অবশেষে সমাপ্তি ঘটল সেই বিবাদের।

থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুট জান ওচা সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ সফর করছেন। এর মাধ্যমে ফের বহাল হলো দুই দেশের পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক।

১৯৮৯ সালের পর এটিই কোনো শীর্ষস্থানীয় থাই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সৌদি আরব সফর। সফরকালে থাই প্রধানমন্ত্রী ১৯৮৯ সালের ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশও করেছেন।

কী হয়েছিল ১৯৮৯ সালে?

১৯৮৯ সালে এক সৌদি রাজকুমারের অধীনে কর্মরত অবস্থায় ক্রিয়াংক্রাই টেচামং নামের একজন থাই পরিচ্ছন্নতাকর্মী মূল্যবান কিছু রত্নপাথর চুরি করে। তার চুরি করা ৫০ ক্যারেটের নীল হীরা পরে কখনোই আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ওই সৌদি নীল হীরার উৎপত্তি হয়েছে কোথায়, তা পরিষ্কার নয়। হীরাটির কোনো ফটোগ্রাফও পাওয়া যায়নি।

শোনা যায়, ওইসব হীরা জহরতের প্রকৃত মূল্য সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিল না ক্রিয়াংক্রাইয়ের। তাই সে সেগুলোকে থাইল্যান্ডে নিয়ে গিয়ে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেয়।

থাই পুলিশ যখন হীরা জহরতগুলোর মধ্যে ২০ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের কিছু অংশ ফেরত দেয়, সৌদিরা অভিযোগ তোলে যে সেগুলোর অধিকাংশই ছিল ভুয়া।

এরপর চুরির এক বছর বাদে ব্যাংককে তিনজন সৌদি কূটনীতিককে ব্যাংককে খুন করা হয়। সেই হত্যাকাণ্ডে কয়েকজন শীর্ষ থাই পুলিশ সদস্যের যোগসূত্রের কথা জানা গেলেও, তাদের কোনো সাজাই দেওয়া হয়নি।

চুরি হওয়া হীরা-জহরতের সন্ধানে যে তদন্তকারী থাইল্যান্ডে যান, তিনিও পরে নিরুদ্দেশ হন। তাছাড়া চুরির অপরাধে সন্দেহভাজন দুজন থাই নাগরিকেরও মৃত্যু হয় রহস্যজনকভাবে।

এই গোটা ঘটনায় কেবল ওই পরিচ্ছন্নতা কর্মী ক্রিয়াংক্রাই টেচামং এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তারকেই কেবল শাস্তি দেওয়া হয়। তবে ক্রিয়াংক্রাইকে জেলে বন্দি থাকতে হয় তিন বছরেরও কম সময়।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার ফলে কী হবে?

থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুট জান ওচার সৌদি আরব সফরকে থাই-সৌদি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে এক বিরাট মাইলফলক বলে মনে করছেন বিবিসির ব্যাংকক প্রতিনিধি জোনাথন হেড।

সৌদি আরবের রিয়াদে পা রাখার পর তাকে বরণ করে নেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।

এক যৌথ বিবৃতিতে থাই প্রধানমন্ত্রী বলেন, "থাইল্যান্ডে ১৯৮৯ ও ১৯৯০ সালে ঘটে যাওয়া হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্য তিনি গভীর আক্ষেপ প্রকাশ করছেন।"

বিশ্লেষকদের মতে, থাই-সৌদি ৩০ বছর ধরে চলা বচসার ফলে দুই দেশই বাণিজ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ হারিয়েছে। এতে করে লক্ষ লক্ষ থাই অভিবাসী শ্রমিকও কাজ হারিয়েছে। ১৯৮৯-৯০ সালের সেই স্ক্যান্ডালের আগে তিন লক্ষ থাই নাগরিক সৌদি আরবে কাজ করত।

থাই প্রধানমন্ত্রী ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের মধ্যে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে থাই শ্রমিকরা এখন থেকে আবার সৌদি আরবে গিয়ে কাজ করতে পারবে। এদিকে এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের ফলে পর্যটন এবং পেট্রোকেমিক্যালের মতো খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়বে বলেও আশা করা হচ্ছে। সূত্র: বিবিসি

নয়া শতাব্দী/এস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ