ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের প্রথম নারী বিচারপতির শপথ গ্রহণ

প্রকাশনার সময়: ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:৩৪

পাকিস্তানের ঐতিহাসিকভাবে রক্ষণশীল আর পুরুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ সুপ্রিম কোর্টের প্রথম নারী বিচারপতি হিসেবে আয়েশা মালিক শপথ নিয়েছেন।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে এক অনুষ্ঠানে তার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যে দেশের আইনিব্যবস্থা প্রায়ই নারীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়; সেই পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতে নারী বিচারপতি নিয়োগকে যুগান্তকারী বলছেন স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরা।

আয়েশা মালিক এখন থেকে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের ১৬ পুরুষ বিচারকের বেঞ্চের একমাত্র নারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ইসলামাবাদের আইনজীবী এবং নারী অধিকার কর্মী নিঘাত দাদ এএফপিকে বলেন, এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটি এক বিশাল পদক্ষেপ। পাকিস্তানের বিচার বিভাগের জন্য এটি ইতিহাস।

নিউইয়র্ক, প্যারিস, লন্ডনে পড়াশোনার পর লাহোরে পাকিস্তানি কলেজ অব লতে উচ্চশিক্ষার পাঠ নিয়েছেন আয়েশা। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৮-১৯৯৯ সালের ফেলো ছিলেন তিনি। বাণিজ্য সংক্রান্ত একাধিক শাখায় গবেষণাপত্র রয়েছে তার। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসের হয়ে সাংবাদিকতা করেছেন তিনি। অক্সফোর্ড রিপোর্ট অন দ্য ইন্টারন্যাশনাল ল ইন দ্য ডমেস্টিক কোর্টেও কাজ করেছেন।

৫৫ বছর বয়সী আয়েশা গত দুই দশক ধরে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরের হাই কোর্টে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশটির সংবিধানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জরুরি রায় ঘোষণা করেছিলেন তিনি। পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক সালিশের প্রয়োগ, নির্বাচনে সম্পত্তির খতিয়ান এবং ধর্ষিতাদের কৌমার্য পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন আয়েশা।

পাকিস্তানে নারীরা ধর্ষণ এবং যৌন হয়রানির মামলায় ন্যায়বিচার পেতে ব্যাপক লড়াইয়ের মুখোমুখি হন। ধর্ষণের মাত্রা নির্ধারণের জন্য নারীদের যে ধরনের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, তা ভুক্তভোগীদের আরও অস্বস্তিতে ফেলে। এছাড়া দেশটির সমাজে অনেক সময় ধর্ষণের জন্য ভুক্তভোগী নারীকেও দায়ী করা হয়।

ইসলামি প্রজাতন্ত্রের এই দেশটির সুপ্রিম কোর্টে মালিকের মতো নারীদের পদায়ন ঐতিহাসিকভাবে রক্ষণশীল এবং পুরুষশাসিত বিচার বিভাগে আরও বেশি নারীর প্রবেশের পথ পরিষ্কার করতে পারে।

দেশটির আইনজীবী ও নারী অধিকার কর্মী খাদিজা সিদ্দিকি বলেন, বিচার বিভাগের সব প্রতিবন্ধকতা ভেঙে দিয়েছেন আয়েশা মালিক। আয়েশার এই পদায়ন বিচারবিভাগে অন্যান্য নারীদের এগিয়ে চলার সাহস জোগাবে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তানের বার কাউন্সিল আয়েশা মালিকের মনোনয়েনের বিরুদ্ধে ধর্মঘট পালন করেছিল।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ