করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের ধাক্কায় ২০২২ সাল শেষে বিশ্বে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়ে ২০ কোটি ৭০ লাখে গিয়ে ঠেকবে।
এই সংখ্যা করোনা মহামারি শুরুর আগের বছর ২০১৯ সালের চেয়ে দুই কোটি ১০ লাখ বেশি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক-২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য।
গত সোমবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে বেকারত্ব ও কর্মসংস্থানের অবস্থা এবং পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় দুই বছরের করোনার কারণে অর্থনীতির ধীর পুনরুদ্ধার এবং নতুন ধরন ওমিক্রন বিশ্বে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় ২০২২ সালে বৈশ্বিক বেকারত্ব বেড়ে ২০ কোটি ৭০ লাখে দাঁড়াবে; যা ২০১৯ সালের চেয়ে দুই কোটি ১০ লাখ বেশি।
আইএলও বলেছে, বিশ্বব্যাপী চাকরি পুনরুদ্ধার মহামারির অনিশ্চয়তার কারণে বিলম্বিত হয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির গতিপথ এবং সময়কাল সম্পর্কে অনিশ্চয়তার কারণে কমপক্ষে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিশ্বে বেকার মানুষের সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় বেশি থাকবে। শুধু তাই নয়, পুনরুদ্ধার করতে পূর্বের ধারণার চেয়েও আরো বেশি সময় লাগবে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই বাধা অব্যাহত থাকবে এবং দুই কোটি ৭০ লাখ মানুষের নতুন চাকরির সুযোগ হবে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএলওর আগের পূর্বাভাসের চেয়ে বিশ্বব্যাপী শ্রম বাজারের দৃষ্টিভঙ্গি খারাপ হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে মহামারির আগের কর্মক্ষমতায় ফিরে আসা বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের জন্য অধরা থেকে যেতে পারে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল গাই রাইডার বলেন, ‘চলমান মহামারি এবং এর ভিন্ন ভিন্ন রূপ বিশেষ করে ওমিক্রন পুনরুদ্ধার কার্যক্রমকে বিলম্বিত করবে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, পুনরুদ্ধারের গতি বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবর্তিত হয়। ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার অঞ্চলগুলোতে সবচেয়ে উৎসাহজনক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকা পিছিয়ে আছে। নতুন বছরে উন্নতির ধারা লক্ষ করা যাচ্ছে। ২০২১ সালে মহামারির আগের তুলনায় ১২ কোটি ৫০ লাখ কম চাকরি ছিল। ২০২০ সালে কম ছিল ২৫ কোটি ৮০ লাখ।’
সামগ্রিকভাবে ২০২২ সালে ২০ কোটি ৭০ লাখ লোক বেকার হবে। এ সংখ্যা বেশিও হতে পারে; কারণ অনেক লোক শ্রমশক্তি ছেড়েছে এবং এখনো ফিরে আসতে পারেননি। এদের মধ্যে অনেক বেশি সংখ্যক নারীও রয়েছেন। কারণ তাদের অনেকেই বাড়ছে অবৈতনিক কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। যেমন স্কুল বন্ধের সময় বাচ্চাদের পড়ানো বা পরিবারের অসুস্থ সদস্যদের যত্ন নেয়া।’
প্রতিবেদনে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, নারীর কর্মসংস্থানের ওপর মহামারির অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাব আগামী বছরগুলোতে সংকুচিত হবে। তবে একটি বড় আকারের ব্যবধান থেকে যাবে। রাইডার বলেন, ‘ব্যাপক চাকরির সুযোগ হয়— এমন সব খাতে আরো বেশি বেশি বিনিয়োগ করতে হবে সব দেশকে।’
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ