ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
ইরাকে করোনা হাসপাতালে আগুন

নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯২

প্রকাশনার সময়: ১৪ জুলাই ২০২১, ০০:০০ | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২১, ০৫:০১

ইরাকের একটি করোনা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কমপক্ষে ৯২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এতে আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। গত সোমবার স্থানীয় সময় গভীর রাতে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নাসিরিয়ায় আল-হোসেন টিচিং হাসপাতালে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে হাসপাতালটির প্রধানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল-কাদিমী।

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইএনএর বরাতে আল জাজিরা গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। কিছু বোঝার আগেই আগুনে পুড়ে যায় আল-হুসেন হাসপাতালের কোভিড ইউনিট। সোমবার রাতে নাসিরিয়া শহরের আল-হুসেন হাসপাতালে এই অগ্নিকান্ডের- হয়। এরপর ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালের অধিকাংশ জায়গায়। আগুনে পুড়ে যাওয়া ৬২ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন দমকল বাহিনীর সদস্যরা।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। অনেক রোগীর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। হাসপাতালের এক গার্ড জানিয়েছেন, করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডের ভেতরে একটি বড় শব্দ শুনতে পাই। তারপর দ্রুত ভবনটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ। চারদিকে শুধু পুড়ে যাওয়া লাশের স্তূপ। হতাহতের সারিতে স্বজনের মরদেহ খুঁজতে আসা এক তরুণ বলেন, ‘আগুন এবং নিরীহ রোগীদের হত্যায় দায়ী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

প্রাথমিক তদন্তের ওপর ভিত্তি করে ধারণা করা হচ্ছে, অক্সিজেন ট্যাংক বিস্ফোরণের কারণে আগুনের সূত্রপাত। অগ্নিকান্ডের-ের কারণ বের করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ওই অঞ্চলের গভর্নর।

স্থানীয় হাসপাতালের মুখপাত্র হায়দার আল জামিলি জানিয়েছেন, তারা এখন পর্যন্ত ৫২টি মরদেহ পেয়েছেন। আর ২২ জনকে দগ্ধ অবস্থায় ভর্তি করেছেন। সেখানকার কোভিড ইউনিটে ৭০টি শয্যার ব্যবস্থা ছিল এবং এটি তিন মাস আগে বানানো হয়। একজন আঞ্চলিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, আগুন যখন লাগে তখন ভেতরে কমপক্ষে ৬৩ রোগী ভর্তি ছিলেন।

এদিকে দেশটির বেসামরিক প্রতিরক্ষা দলের সহায়তায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। নিহতের স্বজনরাও দেশটির স্বাস্থ্য খাতে চরম অনিয়মের অভিযোগ তোলে পুড়ে যাওয়া হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। তারা কয়েকটি মোটরবাইক এবং গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তারা পুলিশের দুটি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। এ বিক্ষোভের মধ্যেই ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালের প্রধানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ওই হাসপাতালের ম্যানেজার পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালিহ বলেছেন, আল-হুসেন হাসপাতালে যে আগুন লেগেছে তা ছিল ব্যাপক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার ফলস্বরূপ। নিহতদের পরিবারের তদন্ত এবং জবাবদিহি দরকার এবং দেশের সংস্থাগুলোকে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

নয়া শতাব্দী/এসইউ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ