শিশু এবং নারীসহ কয়েক ডজন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বহনকারী একটি নৌকা ইন্দোনেশিয়ার আচেহ উপকূলে ভেঙে গেছে। নৌকাটি ভেঙে যাওয়ায় সুমাত্রা দ্বীপের আচেহ প্রদেশের উপকূলে আটকা পড়েছেন তারা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থার বরাত দিয়ে সোমবার ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সাধারণত নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সমুদ্র শান্ত থাকায় এই সময়ে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বছরের পর বছর ধরে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন।
সোমবার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বলেছে, রোববার আচেহ প্রদেশের সমুদ্র উপকূলের বিরুয়েন এলাকার জলে রোহিঙ্গাদের বহনকারী ভেঙে যাওয়া নৌকাটি ভাসতে দেখা গেছে। এই শরণার্থীদের উদ্ধারে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ইন্দোনেশিয়া শাখা বলেছে, নৌকাটিতে প্রায় ৭০ জন শরণার্থী আছেন। তবে স্থানীয় জেলে সম্প্রদায়ের নেতা বদরুদ্দিন জুসুফ নৌকাটিতে ১২০ জন শরণার্থী আছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলছেন, জলে ভাসমান এই শরণার্থীদের তারা খাবার দিয়েছেন।
অ্যামনেস্টি বলছে, জেলেরা আটকা পড়া রোহিঙ্গাদের উদ্ধারে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্দোনেশিয়ার নির্বাহী পরিচালক উসমান হামিদ বলেছেন, শরণার্থীরা যাতে সমুদ্রে বিপদ এড়াতে পারেন, সে জন্য তল্লাশি এবং উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় আঞ্চলিক দেশগুলোর সম্মিলিত দায়িত্ব নেওয়া দরকার।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন প্রদেশে সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত অভিযানের মুখে ৭ লাখ ৩০ হাজারের বেশি সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে পাড়ি জমান। রোহিঙ্গারা বলেছেন, রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, ধর্ষণের পাশাপাশি তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইনে বেসামরিক হত্যা এবং গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও জানিয়েছে।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রাখাইনে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী লড়াই করছে বলে জানিয়েছে। একই সঙ্গে সেখানে কোনো ধরনের পরিকল্পিত নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে দেশটি।
গত কয়েক বছরে মিয়ানমার থেকে অন্তত কয়েকশ’ রোহিঙ্গা শরণার্থী আচেহ পৌঁছেছে, যাদের সবাই কয়েক মাস ধরে সমুদ্রে ভাসছিলেন। সূত্র: রয়টার্স।
নয়া শতাব্দী/এস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ