ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ওমিক্রনের উপসর্গ জানালেন দ. আফ্রিকার সেই চিকিৎসক

প্রকাশনার সময়: ২৯ নভেম্বর ২০২১, ০৮:৩৮

মহামারি করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। প্রাণঘাতি এ ভাইরাসের ‘ওমিক্রন’ ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) ধরনটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

‘ওমিক্রন’ মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছড়িয়েছে। পরে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এ ধরন শনাক্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার ধরনগুলোর মধ্যে ওমিক্রন সবচেয়ে বেশি মিউটেট (রূপান্তর) হয়েছে।

তবে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত রোগীদের শরীরে তেমন উপসর্গ নেই বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ডা. অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজি। তিনিই রোগীদের মধ্যে করোনার নতুন এ ধরনটি প্রথম সন্দেহ করেন এবং পরীক্ষার মাধ্যমে তা নিশ্চিত হন।

ডা. অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজি রয়টার্সকে বলেন, ‘আমার কাছে চিকিৎসা নেওয়া বেশকিছু ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমতি রোগীর শরীরে মৃদু উপসর্গ দেখেছি। হাসপাতালে ভর্তি ছাড়াই তারা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৮ নভেম্বর আমার ক্লিনিকের সাতজন রোগীর মধ্যে অপরিচিত উপসর্গ ছিল। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ধরনের থেকে যার পার্থক্য খুবই কম। ওইদিন একজন রোগী আমাকে অত্যন্ত ক্লান্তি অনুভব করার কথা জানান। তার শরীরে ও মাথায় হালকা ব্যথা অনুভব করছেন বলেও উল্লেখ করেন।’

ডা. কোয়েটজি বলেন, ‘রোগীদের মধ্যে যে উপসর্গ ছিল, তা সাধারণ ভাইরাল সংক্রমণের সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে যেহেতু আমরা বিগত ৮-১০ সপ্তাহ করোনার সংক্রমণ সেভাবে পরীক্ষা করে দেখিনি, তাই তাৎক্ষণিক আমরা তাদের নমুনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তাতে ওই রোগী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের পজিটিভ রিপোর্ট আসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একই দিনে আমরা একই উপসর্গের আরও কিছু রোগী পেয়েছিলাম। তখনি আমরা ভেবেছিলাম, ভিন্ন কোনো কিছু দেখতে যাচ্ছি আমরা। সেদিন আমি নতুন এ ধরনে সংক্রমিত দুই থেকে তিনজন রোগী দেখেছিলাম।’

অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজি বলেন, ‘ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগই পুরুষ, যাদের বয়স ৪০ বছরের নিচে। আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে অর্ধেকই করোনা টিকার পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন। তরুণ রোগীদের ক্ষেত্রে ওমিক্রন খুবই অস্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে। তাদের সতর্ক হওয়া জরুরি।’

তিনি বলেন, ‘করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সময়ে আমরা অসংখ্য ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমিত রোগী দেখেছিলাম। তবে নতুন এ ধরনটি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ক্লিনিক্যাল যে চিত্র, তার সঙ্গে তেমন মিল নেই। ওমিক্রন আক্রান্তদের অধিকাংশই অতি মৃদু উপসর্গে ভুগছেন। আক্রান্তদের পেশীতে মৃদু ব্যথা, গলায় খুসখুস ভাব এবং শুকনো কাশি হচ্ছে। অল্প কয়েকজনের শরীরের তাপমাত্রা সামান্য বেশি পাওয়া গেছে।’

দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কমিউনিক্যাবল ডিজিজ (এনআইসিডি) জানিয়েছে, দেশটির কয়েকটি ল্যাবরেটরিতে গত ১৪ নভেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর সময়ের মধ্যে সংগ্রহ করা নমুনায় ওমিক্রন ধরনটি শনাক্ত হয়। যাচাই শেষে ২৫ নভেম্বর নতুন ধরন হিসেবে নিশ্চিত হওয়া যায়।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ