করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত ইউরোপ এবং এশিয়ায় এবার মারাত্মক বার্ড ফ্লুর বেশ কয়েকটি প্রাদুর্ভাব বিশ্ব প্রাণী স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ওআইই) জানানো হয়েছে। এই প্রাদুর্ভাব ভাইরাসটির আবার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।
বার্ড ফ্লু হিসেবে পরিচিত অতি-সংক্রামক এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার দ্রুত বিস্তার বিশ্বজুড়ে পোলট্রি শিল্পকে সতর্ক অবস্থায় রেখেছে। অতীতে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় লাখ লাখ পাখি, হাঁস ও মুরগিকে মেরে ফেলা হয়। বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাবের কারণে পোলট্রি শিল্পের বাণিজ্যে প্রায়ই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
রয়টার্স বলেছে, এই ভাইরাসটি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে; যে কারণে মহামারি বিশেষজ্ঞদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে বার্ড ফ্লু। চলতি বছরে চীনে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার অতি-সংক্রামক এইচ৫এন১ ধরন ২১ জন মানুষের শরীরে শনাক্ত হয়েছে; যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
দক্ষিণ কোরিয়ার চুংচিওংবুক-দো শহরে প্রায় ৭ লাখ ৭০ হাজার মুরগির একটি খামারে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শনাক্ত হয়েছে বলে সোমবার বিশ্ব প্রাণী স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানিয়েছে দেশটি। দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ওআইই। কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ ওই খামারের সব মুরগি মেরে ফেলেছে।
গত সপ্তাহে জাপানের কৃষি মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিশ্ব প্রাণী স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, চলতি শীত মৌসুমে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মুরগির খামারে বার্ড ফ্লুর প্রথম প্রাদুর্ভাব শনাক্ত হয়েছে। এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার এইচ৫এন৮ ধরনের কারণে এই প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়।
ওআইই বলেছে, ইউরোপে এইচ৫এন১ বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাব নরওয়ের রোগাল্যান্ড অঞ্চলে শনাক্ত হয়েছে। সেখানকার ৭ হাজার মুরগির একটি খামারে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শনাক্ত হয়।
এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব সাধারণত শরৎকালে দেখা যায় এবং এই ভাইরাসটি পরিযায়ী বুনো পাখির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বেলজিয়ামের সরকার দেশটিকে বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাবের উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বার্ড ফ্লুর একটি অতি-সংক্রামক ধরন অ্যান্টওয়ার্পের কাছে বুনো হাঁসের শরীরে শনাক্ত হওয়ার পর সোমবার দেশটির সরকার হাঁস-মুরগি, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীকে বাড়ির ভেতরে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রতিবেশী ফ্রান্সে এবং গত অক্টোবরে নেদারল্যান্ডসে বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাব শনাক্ত হয়। এছাড়াও যুক্তরাজ্য, স্কটল্যান্ড, পোল্যান্ড, জার্মানি, ইতালি এবং ডেনমার্কসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার অতি-সংক্রামক ধরন এইচ৫ এবং এই৫এন১ এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউরোপের বিভিন্ন প্রান্তে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে। তবে হাঁস, মুরগি বা অন্যান্য পাখির মাংস খাওয়ার মাধ্যমে বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ ঘটে না।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ