সহিংসতা, নিরাপত্তাহীনতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা আট কোটি ৪০ লাখ ছাড়িয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ভারতীয় দুই সংবাদমাধ্যম এএনআই ও এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সমসাময়িক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউএনএইচসিআর। এতে বলা হয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ছিল আট কোটি ২৪ লাখ।

এ বাস্তুচ্যুতির পেছনে বিশেষ করে আফ্রিকায় অভ্যন্তরীণ সহিংসতার জের ছাড়াও আরো বহুবিধ দ্বন্দ্ব রয়েছে। করোনা মহামারির সময় সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণও তুলে ধরা হয়েছে এতে। সহিংসতা, করোনা মহামারি, দারিদ্র্য, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও জলবায়ুর দ্রুত পরিবর্তন বাস্তুচ্যুতদের মানবিক দুর্দশাকে আরো জটিল করে তুলেছে।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সহিংসতা, নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন ঠেকাতে পারেনি। ফলে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

বিশ্বজুড়ে চলমান সংঘাত ও সহিংসতা বছরের প্রথম দিকে প্রায় পাঁচ কোটি ১০ লাখ মানুষকে তাদের নিজের দেশেই পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। যার মধ্যে বেশিরভাগ নতুন বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে আফ্রিকায়। আফ্রিকার কঙ্গোতে ১৩ লাখ ও ইথিওপিয়ায় ১২ লাখ নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আফগানিস্তান ও মিয়ানমারেও সহিংসতার কারণে বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন।

একই সঙ্গে বছরের ছয় মাসেই দুই কোটি ১০ লাখেরও কাছাকাছি মানুষ শরণার্থীও হয়েছেন। ইউএনএইচসিআরের এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশিরভাগ নতুন শরণার্থী মাত্র পাঁচটি দেশ থেকে এসেছেন। মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র থেকে ৭১ হাজার ৮০০ জন, দক্ষিণ সুদানের ৬১ হাজার ৭০০ জন, সিরিয়ার ৩৮ হাজার ৮০০ জন, আফগানিস্তানের দুই লাখ পাঁচ হাজার ২০০ জন এবং নাইজেরিয়ার ২০ হাজার ৩০০ জন শরণার্থীর তথ্য দিচ্ছেন তারা।

এমন পরিস্থিতিতে সতর্কবার্তা জানিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্বিগুণ প্রচেষ্টা চালানো ও বাস্তুচ্যুত মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন ইউএনএইচসিআরের প্রধান ।

নয়া শতাব্দী/এম