ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কারাগারেই বিয়ের অনুমতি পেলেন অ্যাসাঞ্জ

প্রকাশনার সময়: ১২ নভেম্বর ২০২১, ২১:৪৬

যুক্তরাজ্যের বেলমার্শ কারাগারে বন্দি উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ তার প্রেমিকা স্টেলা মরিসকে বিয়ে করার অনুমতি পেয়েছেন। ২০১৯ সাল থেকেই যুক্তরাজ্যের লন্ডনের বেলমার্শ কারাগারে আছেন অ্যাসাঞ্জ।

শুক্রবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালে গ্রেফতার এড়াতে অ্যাসাঞ্জ লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দূতাবাসে নির্বাসনে থাকা অবস্থায়ই স্টেলার সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কে আবদ্ধ হন তিনি। এ সময় দূতাবাসের ভেতরেই তাদের প্রায় প্রতিদিন দেখা হতো। এরই ধারাবাহিকতায় অ্যাসাঞ্জের ঔরসে ইতোমধ্যেই দুই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন স্টেলা মরিস।

সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেয়া আইনজীবী স্টেলা মরিস জানান, ২০১১ সালে আইনি সহায়তা দিতে গিয়ে অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে তার প্রথম পরিচয়। পরে ২০১৫ সাল থেকে তারা প্রেম শুরু করেন। যদিও ওই সময়টিতে অ্যাসাঞ্জ ইকুয়েডর দূতাবাসে বন্দির মতো সময় কাটাচ্ছিলেন। কারণ দূতাবাসের বাইরে এলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে, এমন আশঙ্কা ছিল।

২০১৯ সালে সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়। ইকুয়েডরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে দূতাবাস ছাড়তে হয় অ্যাসাঞ্জকে। পরে দূতাবাসের বাইরে অপেক্ষারত লন্ডনের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। সেই সময় থেকেই বেলমার্শ কারাগারে আছেন অ্যাসাঞ্জ। এবার আশঙ্কা করছেন তাকে যে কোনো সময় যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়া হতে পারে। আফগানিস্তান এবং ইরাক যুদ্ধের স্পর্শকাতর তথ্য ফাঁসের জের ধরে ৫০ বছর বয়সি এই অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিককে অনেক দিন ধরেই প্রত্যর্পণের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।

বেলমার্শ কারাগারের এক মুখপাত্র জানান, স্বাভাবিক বন্দির মতোই অ্যাসাঞ্জের বিয়ের আবেদনকে আইন অনুযায়ী, মঞ্জুর করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

যুক্তরাজ্যে বিবাহ আইন ১৯৮৩ অনুযায়ী, বন্দিরা কারাগারে বিয়ের জন্য আবেদন করার সুযোগ পান। আবেদন মঞ্জুর হলে সব খরচ নিজেদের মিটিয়ে বিয়ে করতে হয় তাদের। অ্যাসাঞ্জ এবং স্টেলাও এখন কারাগারেই আইন অনুযায়ী, বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন এবং বিয়ের খরচ তাদের নিজেদেরই বহন করতে হবে।

আইনজীবী স্টেলা মরিসের সঙ্গে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের পরিচয় হয় ২০১১ সালে। তখন মরিস অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে প্রেমে পড়ার দুই বছর পর তারা বাগদান সম্পন্ন করেন। সেই সময় লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ। সেখানে থাকা অবস্থায়ই তাদের দুই ছেলের জন্ম হয়। তাদের জন্মের সময় ভিডিও কলে যুক্ত হয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। সন্তানরা ইকুয়েডর দূতাবাসে বাবার সঙ্গে দেখা করেছিল বলেও উল্লেখ করেছেন স্টেলা।

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন।

ওইসব নথির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধ সম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরো ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়।

এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে সুইডেনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা হয়। গ্রেফতার এড়াতে ২০১২ সালে অ্যাসাঞ্জ লন্ডনের একুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন।

২০১৯ সালে জামিনের শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে যুক্তরাজ্য পুলিশ অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করার পর থেকে বেলমার্শ কারাগারে বন্দি আছেন তিনি। অ্যাসাঞ্জ জেলে যাওয়ার পরই স্টেলার সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ