ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

দুর্নীতিগ্রস্তদের কারণেই আফগান সরকারের পতন

প্রকাশনার সময়: ১১ নভেম্বর ২০২১, ১২:৫৬

গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে রাজধানী কাবুলসহ প্রায় পুরো আফগানিস্তানের দখল নেয় তালেবান। সেসময় দেশটির ক্ষমতায় থাকা আশরাফ গনি সরকারের নিয়ন্ত্রিত সামরিক বাহিনী কোনো প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি। তবে এর জন্য দেশটির দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের দায়ী করেছেন সাবেক আফগান অর্থমন্ত্রী খালিদ পায়েন্দা।

তার অভিযোগ, সাবেক আফগান সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে ‘ভৌতিক সৈন্যের’ সৃষ্টি করেছিলেন এবং তালেবানের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। আর এ জন্যই দ্রুতগতিতে আফগান সরকারের পতন হয়।

বুধবার (১০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ভৌতিক সেনা বলতে কাগজে-কলমে আফগান সেনাবাহিনীতে বহু সেনা থাকলেও বাস্তবে তা ছিল না; এটিই বুঝিয়েছেন সাবেক এই আফগান অর্থমন্ত্রী।

তালেবানের অগ্রাভিযানের মুখে গত ১৫ আগস্ট পশ্চিমা সমর্থিত আফগান সরকারের পতন হয়। দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি সেদিনই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তালেবান। বিশ্বের কোনো দেশই এখনও অবশ্য তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।

সাবেক আফগান অর্থমন্ত্রী খালিদ পায়েন্দা বিবিসিকে বলেছেন, আফগানিস্তানের সাবেক সরকারের নথিপত্রে সামরিক ও পুলিশ বাহিনীতে ৩ লাখ সদস্য থাকার কথা বলা হলেও বাস্তবে তাদের বেশিরভাগেরই কোনো অস্তিত্ব ছিল না।

তার দাবি, সেনা সদস্যদের তালিকায় নামে-বেনামে এমন সব মানুষের নাম ঢোকানো হয়েছে, বাস্তবে যাদের কোনো অস্তিত্বই নেই। বাড়তি নাম দেখিয়ে সেসব ভৌতিক সেনা সদস্যদের বেতনের টাকা নিজেদের পকেটে ভরার জন্যই সামরিক বাহিনীর জেনারেলরা এই কাজ করেছিলেন।

মার্কিন সামরিক বাহিনীসহ আফগানিস্তানে অবস্থানরত সকল বিদেশি বাহিনীর প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার মধ্যেই আফগান ভূখণ্ডজুড়ে গত জুলাই-আগস্টে সামরিক অভিযান জোরদার করে তালেবান। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন পায়েন্দা। পরে আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যান তিনি।

আফগানিস্তানের সাবেক এই অর্থমন্ত্রীর অভিযোগ, আফগান সামরিক বাহিনীতে থাকা প্রকৃত সদস্যের চেয়ে কাগজ-পত্রে ৬ গুণেরও বেশি করে দেখানো হয়েছিল। এমনকি চাকরি ছেড়ে দেওয়া এবং যুদ্ধে নিহত সেনাদের নামও সক্রিয় সেনা সদস্যদের তালিকায় রেখে দেওয়া হতো। কারণ আফগান সামরিক বাহিনীর কমান্ডাররা এসব সেনা সদস্যদের টাকা নেওয়ার জন্য তাদের ব্যাংক কার্ড রেখে দিতেন।

অবশ্য আফগান সেনাবাহিনীতে থাকা প্রকৃত সেনা সদস্যদের সংখ্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন ছিল। আফগানিস্তান পুনর্গঠন বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ ইন্সপেক্টর জেনারেল ২০১৬ সালের এক রিপোর্টে দাবি করেছিলেন যে, আফগান সেনাবাহিনী ও এর পুলিশ বাহিনীতে ঠিক কতজন সদস্য আছেন, তা যুক্তরাষ্ট্র এবং কাবুলের কেউই জানেন না। এমনকি বিদ্যমান যারাই ছিল, তাদের সামরিক দক্ষতা ও সক্ষমতা নিয়ে রিপোর্টে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ