ভারতের তামিলনাডু রাজ্যের রাজধানী চেন্নাই কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতের পর পানিতে তলিয়ে গেছে। গত শনিবার থেকে চেন্নাইয়ের অধিকাংশ প্রধান সড়ক পানিতে ডুবে থাকায় শহরের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া না গেলেও নিচু এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছেন রাজ্যটির কর্মকর্তারা।
স্থানীয় গণমাধ্যমে আসা ফুটেজে উপড়ে পড়া গাছ ও পানিতে তলিয়ে থাকা গাড়ি দেখা গেছে। ২০১৫ সালের পর থেকে সেখানে এবারই সবচেয়ে ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনেক ব্যবহারকারী পরিস্থিতিকে ২০১৫ সালের ভয়াবহ বন্যার সঙ্গে তুলনা করেছেন। ওই বন্যায় রাজ্যটিতে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।
এদিকে বিদ্যুৎস্পর্শের ঘটনা এড়াতে পূর্বসতর্কতা হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগ সরবরাহ বন্ধ করে দিলে রোববার চেন্নাইয়ের কয়েকটি অংশে বিদ্যুৎ চলে যায়।ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, রাবারের নৌকাযোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধার করা হচ্ছে। আশপাশের বাড়িগুলো পানিতে তলিয়ে আছে। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী ও সেনাবাহিনী এ উদ্ধার কাজে সহায়তা করছে।
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় তামিলনাডুর বিভিন্ন অংশে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে বলে গত রোববার আবহাওয়া কর্মকর্তারা জানান। এ পূর্বাভাসের পর কর্তৃপক্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দুদিনের ছুটি ঘোষণা করে।
চেন্নাই ও প্রতিবেশী তিন জেলার সব স্কুল ও কলেজ বন্ধ আছে। বিপজ্জনক এ পরিস্থিতিতে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন কর্মকর্তারা। উপকূল বরাবর বসবাস করা জেলেদের সাগরে না যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চেন্নাই সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, তারা শহরজুড়ে আশ্রয় ও চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করেছে এবং বন্যার্তদের মাঝে খাবার বিতরণ করছে।
অপরদিকে তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন জানিয়েছেন, চেন্নাই ও ১১ জেলায় ২০ সেন্টিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে, এতে হওয়া ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে মন্ত্রীদের মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছরই এ সময়ে চেন্নাইয়ে ভারি বৃষ্টিপাত হয়। তবে নিয়ন্ত্রণহীন নগরায়ণ ও নিম্নমানের নগর পরিকল্পনার কারণে জলাবদ্ধতা, ক্ষয়ক্ষতি ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে জলবায়ু পরিবর্তনও এ সমস্যায় ভূমিকা রাখছে, ঘন ঘন অতি ভারি বৃষ্টিপাত নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ