গত রোববার প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল কাধিমির বাসভবনে ড্রোন হামলা চালিয়ে তাকে হত্যাচেষ্টার জেরে ইরাকজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাজধানী বাগদাদের গ্রিন জোন এলাকার আকাশে সামরিক হেলিকপ্টার চক্কও দেয়। থমথমে পরিস্থিতি চারপাশজুড়ে।
এই কূটনৈতিক এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। এ হামলার পর সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ প্রশাসনে চরম অব্যবস্থাপনায় বেড়েছে অস্থিরতা। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ড্রোন হামলায় ইরাকে নতুন করে উত্তেজনা সামনে এলো।
ইরাকে গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে যখন বাগদাদজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ চলছে, তখনই রাজধানী বাগদাদের কঠোর নিরাপত্তা ঘেরা গ্রিন জোনে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এ হামলা হলো। তবে কে বা কারা এ হামলা চলিয়েছে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এ হামলায় প্রধানমন্ত্রী কাধিমি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। তবে তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছয় নিরাপত্তা সদস্য গুরুতর আহত হন। একে কাপুরুষোচিত হামলা উল্লেখ করে জড়িতদের অচিরেই মুখোশ উন্মোচনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কাধিমি। এদিকে এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, জর্ডান, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশ।
এমন বাস্তবতায় দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে রোববার ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সলিহ ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে আলোচনা থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা- এ বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি দেশটির সরকার।
বাগদাদের রাজনৈতিক বিশ্লেষক বাসাম আল-কিজউইনি মনে করেন, যারা সম্প্রতি নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে তারাই মুস্তাফা কাধিমির সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এ হামলা তারাই ঘটিয়েছে। প্রথমে রাস্তায় তারপর ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে, আর এখন প্রধানমন্ত্রীর ওপর হামলা।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর কট্টর সমালোচক ইরানপন্থি মিলিশিয়া কাতাইব হিজবুল্লাহর এক জ্যেষ্ঠ নেতা আবু আলি আল-আসকারি বলেন, ‘আমার মনে হয় না তাকে হত্যার জন্য বাসভবনে হামলা চালানোর কারো ইচ্ছে আছে।’
একদিকে সরকারবিরোধী আন্দোলন অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা, সবমিলিয়ে দেশের পরিস্থিতি আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে অভিমত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সব পেছনে ফেলে রোববার ফেসবুকে মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি, ইরাকের শান্তি ও স্থিতিশীলতায় সব পক্ষকে আলোচনার আহ্বান জানান।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ