ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘ছয় মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালাতে পারে আইএস’

প্রকাশনার সময়: ২৭ অক্টোবর ২০২১, ২১:৫৫

আফগানিস্তানে সক্রিয় ইসলামপন্থি জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস (ইসলামিক স্টেট) কমপক্ষে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। তাদের এমন হামলা চালানোর ইচ্ছাও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা নীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি কলিন গত মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসে দেয়া সাক্ষ্যে তার এমন পর্যবেক্ষণের কথা তুলে ধরেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এর আগেও অন্য মার্কিন কর্মকর্তারা আফগানিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলো নিয়ে তাদের শঙ্কার কথা জানান। তবে দুই দশকব্যাপী যুদ্ধে হেরে গত আগস্টে আফগানিস্তান থেকে দ্রুত সেনা প্রত্যাহারের পর এখনো দেশটিকে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্ডার সেক্রেটারি কলিনের এ মন্তব্যে তেমনই আভাসই পাওয়া যাচ্ছে।

আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া কট্টর ইসলামপন্থি তালেবানের সঙ্গে জঙ্গি আইএসের ঘোর শত্রুতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে চলে আসার পর আইএসের একের পর এক আত্মঘাতী বোমা ও অন্য হামলায় জর্জরিত দেশটির আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে তালেবানকে ভীষণ বেগ পেতে হচ্ছে। দেশটিতে আইএস মূলত সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়ের ওপর বোমা হামলা চালাচ্ছে। এমনকী তারা পূর্বাঞ্চলীয় শহর জালালাবাদে তালেবান মিলিশিয়া বাহিনীর এক সদস্যেরও শিরচ্ছেদ করেছে।

এমন পরিস্থিতির ধারবাহিকতায় মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটিকে দেওয়া সাক্ষ্যে কলিন কার বলেছেন, ‘আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র চলে আসার পর আফগানিস্তানে আইএসের সঙ্গে তালেবানের কার্যকরভাবে লড়ার সক্ষমতা আদৌ আছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। আফগানিস্তানে আইএসের কয়েক হাজার প্রশিক্ষিত সদস্য আছে বলে মার্কিন এ কর্মকর্তার ধারণা।

সাক্ষ্যে কলিন বলেন, ‘আমাদের মূল্যায়ন হচ্ছে আইআইএস-কে (আইএস) আফগানিস্তানে আইএস এর খোরাসান শাখা এবং তালেবান একে অপরের ঘোর শত্রু। সুতরাং আইএসকে ধাওয়া করার বিষয়ে তালেবানের প্রবল আগ্রহ থাকার কথা। কিন্তু তাদের সে সক্ষমতা আছে কিনা, তা দেখতে হবে।’

এদিকে নতুন তালেবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বলেছেন, আইএস জঙ্গিদের হুমকি মোকাবেলা করা হবে। আফগানিস্তান অন্য দেশে হামলা চালানোর ঘাঁটি হবে না।

সিনেটে সাক্ষ্যে কলিন আফগানিস্তানে সক্রিয় আল কায়েদা নিয়েও কথা বলেছেন। তার ভাষ্য মতে, তালেবানের সঙ্গে সখ্য থাকায় আল কায়েদা আরও জটিল সমস্যা তৈরি করেছে। এ সখ্যতার কারণেই ২০০১ সালে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে আল কায়েদার হামলার পর আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তালেবান আল-কায়েদা নেতাদের আফগানিস্তানে আশ্রয় দিয়েছিল।

কলিন বলেন, আফগানিস্তানের বাইরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা চালানোর সক্ষমতা আবারও অর্জন করতে আল কায়েদার ‘এক থেকে দুই বছর’ লাগতে পারে। কলিন আরও জানিয়েছেন, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে এসব গোষ্ঠীগুলোর কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটানো যেন আইএস বা আল-কায়েদা কখনোই যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালানোর মতো সক্ষম হয়ে না ওঠে। তবে অনেক কর্মকর্তা ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় আফগানিস্তানে সৈন্য উপস্থিতি না রেখে আল কায়েদা ও আইএসের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে শনাক্ত এবং তাদের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটানো খুবই কঠিন হবে বলে সতর্ক করেছেন। আইএস ও আল কায়েদার ‘টার্গেটগুলোতে’ হামলা চালাতে সক্ষম ড্রোনগুলোকে উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে পাঠাতে হচ্ছে।

তবে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় পাঠানো সৈন্যদের জায়গা দিতে আফগানিস্তানের প্রতিবেশী কোনো দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের চুক্তি হয়নি বলে জানিয়েছেন কলিন।

অপরদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, ‘আফগানিস্তান থেকে আসা হুমকির বিষয়ে সতর্ক থাকতে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যহত রাখবে। যার মাধ্যমে আল কায়েদা ও আইএসের মতো গোষ্ঠীগুলোর হুমকিকে শনাক্ত করা যাবে।’

প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানে দুই দশকের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে তালেবানের পাশাপাশি আইএস ও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হয়।

নয়া শতাব্দী/ডেস্ক

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ