গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে যে এক ধরনের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে, তা চলছে এখনও। সমাধান হচ্ছে না ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশিদের ভিসা জটিলতারও। খুবই সীমিত পরিসরে ভিসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস।
এ ভিসা প্রতিবন্ধকতায় একদিকে যেমন বিপাকে পড়েছেন ভারতীয় হাসপাতালগুলোর শরণাপন্ন হওয়া বাংলাদেশি রোগীরা, তেমনি অন্যদিকে বিদেশি রোগীর সংকটে পড়েছে ভারতের চিকিৎসা খাতও। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে ৫০ শতাংশেরও বেশি বিদেশি রোগী হারিয়েছে দেশটি। খবর আল জাজিরার।
আল জাজিরায় শনিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাধারণত প্রতি বছর ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন প্রায় ২০ লাখ বিদেশি রোগী, যার ৬০ শতাংশই বাংলাদেশি। গত ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমে গেছে।
অর্থাৎ, এসব হাসপাতালে বিদেশি রোগীর সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া বিদেশি রোগীরা দেশটির অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখেন। আল জাজিরার মতে, ২০২৩ সালে এই 'মেডিকেল ট্যুরিজম' খাত থেকে প্রায় ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার (৭৭ হাজার ১৮৯ কোটি রুপি) যোগ হয় ভারতের অর্থনীতিতে।
বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, শেখ হাসিনার পতনের আগে বাংলাদেশে ভারতের পাঁচটি ভিসা কেন্দ্রে দৈনিক অনলাইন ভিসার স্লট ছিল সাত হাজার। এখন এই সংখ্যা ৫০০-তে নামিয়ে আনা হয়েছে।
বাংলাদেশি রোগী যাওয়া কমে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কলকাতার হাসপাতালগুলো।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট কলকাতার মাল্টি-স্পেশালটি পিয়ারলেস হাসপাতালের বহির্বিভাগে আগে দিনে ১৫০ জন বাংলাদেশি রোগী চিকিৎসা নিতেন। এই সংখ্যা কমে এখন ৩০-এর নিচে নেমে এসেছে।
ভারতের স্বাস্থ্যসেবা অ্যাসোসিয়েশনের আলেকজান্ডার থমাস আল জাজিরাকে জানান, বেঙ্গালুরুর নারায়ণ হেলথ, চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো এবং ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজও (সিএমসি) এই ভিসা প্রতিবন্ধকতার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ