তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকছেন কিনা, তা জানা যাবে আজ। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ভবানীপুর বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন শেষে এবার ফলাফল ঘোষণার পালা। মমতার জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূলের নেতারা। তবে মুখ্যমন্ত্রীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রিয়াঙ্কা তিব্রেওয়ালের দল বিজেপিও ভবানীপুরে নিজেদের জয়ের আশা ছাড়ছেন না।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতার এ আসনটিতে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে উপনির্বাচনে দাঁড়ানো মমতার ভাগ্য নির্ধারণ হবে আজ। তবে তৃণমূল কংগ্রেস ভবানীপুর আসনে জয়ের বিষয়ে আশাবাদী শতভাগ। এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও একই আভাস দিয়েছেন। তবে ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরে আশানুরূপ ভোট না পড়ায় আশাহত মমতার দল। নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্যমতে, ভবানীপুরে বৃহস্পতিবার ভোট দিয়েছেন ৫৩ দশমিক ৩২ শতাংশ ভোটার। এতে মমতার জয়ে বিরোধী বিজেপির চেয়ে ভোটের ব্যবধান কম হওয়ার আশঙ্কা করছে তৃণমূল। এদিকে ভবানীপুরে জয়ের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের পরিবহনমন্ত্রী ও কলকাতা করপোরেশনের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, কম করে হলেও ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতবেন মমতা।
অপরদিকে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘ফল যা-ই হোক না কেন, আমিই উইনার। জয় নিয়ে আমি এখনো আশাবাদী।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভবানীপুর আসনে মমতা অঘটন ঘটাবেন বলেছেন। এটা এত সহজ নয়। তাই বলছি, নন্দীগ্রাম আসনের মতো মমতা এবার ভবানীপুরেও হেরে গেলে অবাক হওয়ার কারণ থাকবে না।’
গণনাকেন্দ্রের বাইরে ১৪৪ ধারা জারি :
আনন্দ বাজার পত্রিকা গতকাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভবানীপুর আসনে আজ গণনাকেন্দ্রের বাইরে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। গত শনিবার লালবাজারের পক্ষ এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভবানীপুর কেন্দ্রে ভোট গণনার সময় যাতে কোনো রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে আগে থেকে পদক্ষেপ নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। গণনাকেন্দ্রের বাইরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তার ফলে গণনাকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে পাঁচজন বা তার বেশি মানুষের জমায়েত করা যাবে না। পাথর, আগ্নেয়াস্ত্র, আতশবাজি বা অন্য কোনো ধরনের বিস্ফোরক নিয়ে গণনাকেন্দ্রের কাছে ঘোরা যাবে না। এ নিয়ম ভঙ্গ করলে কড়া ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। ভোটগ্রহণের আগে এ আসনের প্রতিটি বুথেই কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে দেয় নির্বাচন কমিশন। এবার ভোটগণনা নিয়েও কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন। দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, গত বিধানসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম আসন থেকে মমতা পরাজিত হন। ভারতীয় সংবিধান মোতাবেক তাকে মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসায় তৃণমূল। তাই ভবানীপুর থেকে মমতাকে জয়ী করার লক্ষ্যেই এ আসন থেকে পদত্যাগ করেন শোভনদেব। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায়, বিধানসভা নির্বাচনের হারের ছয় মাসের মধ্যে মমতাকে রাজ্যের যে কোনো একটি বিধানসভা আসনে জিতে মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিশ্চিত করতে হবে। প্রসঙ্গত, ভবানীপুর আসনের মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার ৪৫৬। গত বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর আসনে জয়ী হন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু পরে তিনি পদত্যাগ করলে আসনটি শূন্য হয়। এর আগে এ আসনে ২০১১ ও ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬ সালে একই আসনে ২৫ হাজার ৩৪১ ভোটের ব্যবধানে জয় পান মমতা । আবার ২০১১ সালে ৫৪ হাজার ২১৩ ভোটের ব্যবধানে ভবানীপুরে জয় নিশ্চিত করেন তিনি।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ