ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

কী হচ্ছে বিদেশি টিভি চ্যানেল নিয়ে

প্রকাশনার সময়: ০৩ অক্টোবর ২০২১, ০৪:৩৮ | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২১, ০৪:৪৩

বিজ্ঞাপনই কাল হলো বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞাপন প্রচারের জেরে বন্ধ বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার। সরকারি নির্দেশিকার জেরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের অপারেটররা। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেসব বিদেশি চ্যানেলে অনুষ্ঠানের মাঝে বিজ্ঞাপন দেখায়, সেগুলো সম্প্রচার করা যাবে না।

এদিকে, ক্যাবল অপারেটররা বলছেন, বিজ্ঞাপনসহ অনুষ্ঠান প্রচার করে এমন বিদেশি চ্যানেলগুলো থেকে বিজ্ঞাপনের অংশটুকু কেটে বাদ দিয়ে সম্প্রচার করা সম্ভব নয়। প্রযুক্তিগত বাধ্যবাধকতার জন্যই তারা চ্যানেলগুলো দেখানোই বাদ দিয়ে দিয়েছেন। ফলে বহু দর্শক এবার বেশ কয়েকটি বিদেশি চ্যানেল দেখতে পাবেন না।

এই নির্দেশ পালন করতে ঢাকার বেশকিছু অপারেটরের কার্যালয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ক্যাবল অপারেটরদের অ্যাসোসিয়েশনের নেতা আনোয়ার পারভেজ বলেন, দেশীয় পরিবেশকরা বিদেশি চ্যানেলগুলোকে বিজ্ঞাপন ছাড়া অনুষ্ঠান দেয়ার ব্যাপারে আলোচনা করেছিল। কিন্তু বিদেশি চ্যানেলগুলো তাতে রাজি হয়নি। দেশীয় পরিবেশক এবং ক্যাবল অপারেটরদের বিদেশি চ্যানেলের অনুষ্ঠান থেকে ক্লিন ফিড করা বা বিজ্ঞাপন বাদ দেয়ার ব্যবস্থা নাই। সে কারণে সরকারের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে তারা সব বিদেশি চ্যানেলের অনুষ্ঠান সম্প্রচার দেশে বন্ধ রেখেছেন। তিনি বলেন, পরিবেশক এবং ক্যাবল অপারেটরদের বিদেশি চ্যানেল থেকে বিজ্ঞাপন বাদ দেয়ার ব্যবস্থা যে নেই- সেটা তারা তথ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার কোনো বিদেশি চ্যানেল বন্ধ করেনি। বিদেশি চ্যানেলগুলোর যারা বাংলাদেশি এজেন্ট বা অপারেটর তারাই বন্ধ করে রেখেছে। যেহেতু তাদের বিজ্ঞাপন ছাড়া ফিড দিচ্ছে না, সেজন্য তারা সম্প্রচার বন্ধ রেখেছে। তিনি বলেন, আইন মানা বিদেশি চ্যানেলগুলোর যেমন দায়িত্ব, তেমনি যারা বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার করে তাদেরও আইন মানা দায়িত্ব। হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা আশা করব বিদেশি চ্যানেলগুলো খুব সহসা বিজ্ঞাপন ছাড়া বাংলাদেশে ফিড পাঠাবে। তাহলে তো এখানে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। বিজ্ঞাপনবিহীন যেসব চ্যানেল আছে সেগুলো সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। এজেন্ট ও ক্যাবল অপারেটরদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা বলছে, তাদের কিছু কারিগরি ত্রুটি আছে। সেজন্য সম্প্রচার করতে পারছে না। এটা সহসাই নিরসন হয়ে যাবে বলে তারা তথ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন।

বিদেশি টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়ার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন অনেক টিভি দর্শক। সাকিবুজ্জামান প্রান্ত’র পছন্দ খেলা। তিনি শুধু খেলার চ্যানেলগুলোই দেখেন। বিশেষ করে বলতে গেলে তিনি মূলত আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসির ফ্যান। মেসি বার্সেলোনায় থাকাকালে গভীর রাত পর্যন্ত লা লিগার খেলা দেখতেন। তবে এখন লিগ ওয়ানের পিএসজির ম্যাচ দেখেন। তিনি বলছেন বিষয়টা দুঃখজনক। আমি মেসির ফ্যান। এছাড়া আরো অনেকের খেলাই দেখি, টপ ফাইভ লিগের খেলার খোঁজখবর রাখি। সেক্ষেত্রে আমাদের জন্য অনেক দুর্ভাগ্যজনক যে চ্যানেলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। তাহলে আমরা এখন কীভাবে খেলা দেখব? উল্লেখ্য, ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইনের ১৯(১৩) ধারায় বলা হয়েছে, ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিদেশি কোনো চ্যানেলে বিজ্ঞাপন সম্প্রচার করা যাবে না।

এই আইনের জেরে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে জি নেটওয়ার্কের চ্যানেলগুলো প্রায় ২৪ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। সেবার ভিন দেশের টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন কেন সম্প্রচারিত হচ্ছে? তা জানতে চেয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে নোটিস দেয়া হয়েছিল। তারপরই ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থা জাদু ভিশন লিমিটেডের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ওই চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ