ঢাকা, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ড. ইউনূসের তিন প্রস্তাব

প্রকাশনার সময়: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩১

মিয়ানমারের সামরিক জান্তার অত্যাচারের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগণের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন নিয়ে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে প্রথম দিনেই রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সভায় এসব কথা বলেন তিনি। মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে তিনটি প্রস্তাব দেন তিনি। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে এ বৈঠক হয় বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন। সেগুলো হলো-

১. জাতিসংঘের মহাসচিব যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে একটি সব স্টেকহোল্ডারকে সম্মেলন আহ্বান করতে পারেন। সম্মেলনের সংকটের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা উচিত এবং উদ্ভাবনী ও অগ্রসর উপায়ে পরামর্শ দেওয়া উচিত।

২. ইউএন সিস্টেম ও বাংলাদেশ যৌথভাবে পরিচালিত জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান, শক্তিশালী করা দরকার। স্লাইডিং ফান্ডিং পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে রিসোর্স বাড়ানোর প্রক্রিয়াকে আরও রাজনৈতিক চাপ দিতে হবে।

৩. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যামূলক অপরাধ মোকাবিলায় ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির ব্যবস্থাকে গুরুত্বসহকারে সমর্থন করা। আমি আইসিসিতে মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রসিকিউটর করিম খানের কাছ থেকে শুনানির অপেক্ষায় আছি। সামরিক জান্তা দ্বারা সংঘটিত অন্যায়ের প্রতিকার মিয়ানমার দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও নিরাপত্তার চাবিকাঠি।

বৈঠকেমিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত জুলি বিশপ, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডি ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগণের মর্যাদা ও নিরাপত্তা এবং অধিকার সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি আমার সরকারের পূর্ণ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। আমরা এই সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের অপেক্ষায় আছি।

সভায় ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে ১ দশমিক ২ মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। বিশ্ব এই বিষয়ে কম সচেতন যে বাংলাদেশের শিবিরগুলোতে প্রতি বছর প্রায় ৩২ হাজার নবজাতক শিশু এই জনসংখ্যার সঙ্গে যুক্ত হয়। গত দুই মাসে আরও ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে রোহিঙ্গাদের আতিথেয়তা সত্ত্বেও, একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে সামাজিক-অর্থনৈতিক-পরিবেশগত ব্যয়ের ক্ষেত্রে এত বেশি খরচ হয়ে চলেছে। এগুলো আমাদের জন্য প্রথাগত ও অপ্রথাগত নিরাপত্তাঝুঁকি। আমাদের নিজস্ব উন্নয়ন অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্পষ্টতই বাংলাদেশ তার ধৈর্যসীমায় পৌঁছেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যতই মানবিক দিক বা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে নিয়োজিত থাকুক, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের একমাত্র টেকসই সমাধান।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ