মুহিবুল্লাহ মিয়ানমারের রাখাইনের প্রদেশের মংডু টাউনশিপের বাসিন্দা ছিলেন। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ঐ এলাকায় অভিযান শুরু করার পর প্রাণ রক্ষার্থে তিনি পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন এবং সীমান্ত অতিক্রমের পর আশ্রয় নেন কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে।

২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন পীড়নের মুখে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়, মুহিবুল্লাহও সেসময়ই বাংলাদেশে এসেছিলেন।

কক্সবাজারের সাংবাদিক তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাস্তুচ্যুত এই রোহিঙ্গাদের জন্য সেসময় একজন গ্রহণযোগ্য নেতার অভাব ছিল। গত কয়েক বছর ধরে সে অভাব পূরণ করেছিলেন মুহিবুল্লাহ।

"তিনি মানুষের সাথে কথা বলতেন খুব গুছিয়ে, মানুষকে বোঝানোর শক্তিটা তার খুব প্রবল ছিল। আরাকানের মূল সমস্যা, রোহিঙ্গাদের জাতিগত সমস্যা, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়গুলো সবই তিনি রোহিঙ্গাদের মাঝে বুঝিয়ে বলতে পারতেন।"

মুহিবুল্লাহর ডাকে ২০১৯ সালে আয়োজিত রোহিঙ্গা গণহত্যার বিরুদ্ধে মহাসমাবেশে যেখান রোহিঙ্গারা বলেন, নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতের দাবি পূরণ হলেই কেবল তারা মিয়ানমার ফেরত যাবেন।

রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল যখন বাংলাদেশে আসে, তখন আন্তর্জাতিক সংস্থার যেসব প্রতিনিধি ও কর্মকর্তা রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে গিয়েছিলেন, তখন "তাদের সাথে কথা বলার মত একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন তিনি, এবং তিনি ছিলেন একজন সুবক্তা।"

২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট উখিয়ার কুতুপালং শিবিরের ফুটবল মাঠে কয়েক লাখ রোহিঙ্গার গণহত্যা বিরোধী যে মহা সমাবেশ হয়েছিল, তা সংগঠিত করেছিলেন মুহিবুল্লাহ। তার ডাকেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেই বিশাল সমাবেশ।

গণহত্যা বিরোধী ওই সমাবেশ বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছিল। ওই সমাবেশের লক্ষ্য ছিল রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয় এবং তাদের মিয়ানমারে ফেরত যাবার ক্ষেত্রে শর্তগুলো বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বক্তব্য রাখার জন্য ২০১৯ সালে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন মুহিবুল্লাহ। সেসময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাতের জন্য হোয়াইট হাউসেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল তাকে।

নয়া শতাব্দী/এম