মঙ্গলগ্রহে তরল পানির মজুদ আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসার মার্স ইনসাইট ল্যান্ডার রোভার থেকে পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে এই দাবি করছেন তারা। এতে করে লাল গ্রহটিতে বসতি গড়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
অবিশ্বাস্য হলেও, বিস্ময়কর এ তথ্য প্রকাশ করেছে, মার্কিন সংস্থা- ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস। নাসার মার্স ইনসাইট ল্যান্ডারের ডেটা ব্যবহার করে পাওয়া গেছে এ তথ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলপৃষ্ঠের সাড়ে ১১ থেকে ২০ কিলোমিটারের গভীরে রয়েছে বিশাল এই জলাধার। লুকিয়ে আছে ভূগর্ভস্থ শিলার ফাটলে। যা, জমা হয় বিলিয়নখানেক বছর পূর্বে। সুবিশাল এই পানির স্তরে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা প্রবল, এমনটাই দাবি বিজ্ঞানীদের।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার সহকারী অধ্যাপক ভাসান রাইট বলেন, মঙ্গলগ্রহে পানির অস্তিত্ব পাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পানি গ্রহের বিবর্তনের সবকিছুকে প্রভাবিত করে। আমরা জানি যে, জীবন ধারণের জন্য একটি মূল উপাদান পানি। যার মানে হলো সেখানে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ থাকতে পারে।
এর আগে, লাল গ্রহটিতে জমে থাকা পানির সন্ধান মিললেও এবারই প্রথম তরল পানির খবর পাওয়া গেলো। মঙ্গলগ্রহের যে বিরান-রুক্ষ পৃষ্ঠের সাথে আজ বিশ্ব পরিচিত; ঠিক৩শ’ কোটি বছর আগে তেমন ছিল না এটি। তখন দেখতে অনেকটাই পৃথিবীর মতো ছিলো গ্রহটি। ছিল নদী, হৃদ খুব সম্ভবত সমুদ্রও। যা শুকিয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে ভাসান রাইট বলেন, প্রায় ৩ বিলিয়ন বছর আগে অনেকটাই পৃথিবীর মতোই ছিল মঙ্গলগ্রহ। কিন্তু এখন সেটি নেই। এখন গ্রহটি শুকনো। তাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, পানি কোথায়? সেগুলো কোথায় গেলো? এজন্যই এই গবেষণা।
তবে পানি পাওয়ার পর নতুন করে আশা জাগতে শুরু করেছে। ২০১৮ সালে পাঠানো রোভারটি মঙ্গলের ভূকম্পন ডাটা থেকে তরল পানির সন্ধান পাওয় যায়। এর আগে মেরু অঞ্চলে বরফ আকারে পানি থাকার প্রমাণ মিলেছিল। জলীয়বাষ্পের উপস্থিতিও নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এ প্রথম তরল পানির সন্ধান মিলেছে।
ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, চার বছর মঙ্গলের পালস বোঝার চেষ্টা করে মারস ইনসাইট। ১৩১৯টি ভূকম্পন রেকর্ড করে রোভারটি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেখান থেকেই পানির উপস্থিতি টের পেয়েছেন তারা।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ