ঢাকা, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জিলহজ ১৪৪৫

দুর্ঘটনার জেরে ৪৮৭ মিলিয়ন ডলার জরিমানার মুখে বোয়িং

প্রকাশনার সময়: ০১ জুলাই ২০২৪, ১৬:২২

দুইটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাকে 'প্রতারণা' হিসেবে অভিহিত করে উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনতে যাচ্ছে মার্কিন বিচার বিভাগ। বিচারিক কার্যক্রম এড়াতে দায় স্বীকার করে ৪৮৭ মিলিয়ন ডলার জরিমানার বিকল্প সুযোগ থাকছে প্রতিষ্ঠানটির সামনে।

রোববার (৩০ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

রয়টার্সকে জানিয়েছে, সম্প্রতি একের পর এক দুর্ঘটনার জেরে বোয়িংয়ের চুক্তি ভঙ্গের বিষয়টি সামনে আসে মার্কিন বিচার বিভাগের। বিষয়টিকে ‘প্রতারণা’ হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনা হচ্ছে। অবশ্য বোয়িংকে দায় স্বীকার করে নিতে অথবা বিচারিক কার্যক্রমের মুখোমুখি হওয়ার বিকল্প দেওয়া হবে।

সূত্রমতে, বিকল্প সুযোগ হিসেবে বোয়িংকে ‘প্রতারণা’র দায় স্বীকার করে ৪৮৭ মিলিয়ন ডলার জরিমানা ও তিন বছর নিরাপত্তা ও সুশাসন প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষ অডিট মেনে নেওয়ার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেবে মার্কিন বিচার বিভাগ। এই প্রস্তাবে সাড়া দেওয়ার জন্য বোয়িংকে এ সপ্তাহের শেষ দিন পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে এবং এতে দরকষাকষির কোনো সুযোগ থাকবে না বলে জানা গেছে। বোয়িং যদি দায় স্বীকার করতে সম্মত না হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করা হবে।

এ বিষয়ে বোয়িং ও বিচার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে রয়টার্স। কিন্তু এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি কোনো পক্ষই।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বোয়িংয়ের দুইটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়ে মোট ৩৪৬ জন প্রাণ হারান। এরপর ২০২১ সালে মার্কিন বিচার বিভাগের সঙ্গে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। চুক্তির অংশ হিসেবে আড়াই বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিয়েছিল বোয়িং। যার ফলে ৭৩৭ ম্যাক্সের ত্রুটিপূর্ণ নকশার বিপরীতে প্রতারণার অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি পায় প্রতিষ্ঠানটি। চুক্তিতে যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে তিন বছর পর্যন্ত বোয়িংকে গুণগত মান সংক্রান্ত বিভিন্ন শর্ত মেনে চলার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছিল। এ বছরের ৭ জানুয়ারি শেষ হয় ওই চুক্তির মেয়াদ।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন জটিলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। এবার আর্থিক জরিমানা গোনার পাশাপাশি সরকারের বাড়তি নজরদারির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বিচার বিভাগের এই সিদ্ধান্তে বোয়িং আরও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, দায় স্বীকার করে নিলে ভবিষ্যতে সরকারি কাজ পাওয়ার যোগ্যতা হারাতে পারে বোয়িং। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির আয়ের বড় উৎস মার্কিন সামরিক বাহিনী। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে ছাড় দেওয়া হলেও মার্কিন সামরিক বাহিনী বোয়িংকে সেই সুবিধা দেবে কি না, সেটা এখনো নিশ্চিত নয়। এটি নির্ভর করবে বিচার বিভাগের চুক্তিতে কী কী উল্লেখ করা আছে, তার ওপর।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বোয়িংয়ের জন্য প্রস্তাবিত নতুন চুক্তিতে ৪৮৭ দশমিক দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানার কথা বলা হয়েছে। তবে বোয়িংকে আপাতত এই জরিমানার অর্ধেক অর্থ পরিশোধ করলেই চলবে। এর আগে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে লায়ন এয়ার ও ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের দুর্ঘটনার জন্য দেওয়া জরিমানার বিপরীতে বাকি অর্থ ঋণ হিসেবে পাবে বোয়িং।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ