ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

মাত্র ৫ শতাংশ আফগান পরিবার পর্যাপ্ত খাবার পায়

প্রকাশনার সময়: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৪:৪৩
সংগৃহীত ছবি

কাজের সুযোগ কমে যাওয়া, অর্থের অভাব এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে আফগানিস্তানে নতুন শ্রেণির ক্ষুধার্ত মানুষ তৈরি হচ্ছে বলে গত বুধবার সতর্ক করেছে জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। প্রথমবারের মতো দেশটিতে গ্রামাঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি শহরের বাসিন্দারাও একই হারে খাদ্য অনিশ্চয়তায় পড়ছেন। গত তিন বছরে দুই ধাপে হওয়া খরা এ খাদ্য ঘাটতিকে সাম্প্রতিক ডব্লিউএফপির এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ডব্লিউএফপির ওই জরিপে দেখা গেছে, আফগানিস্তানের মাত্র পাঁচ শতাংশ পরিবারে প্রতিদিন খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। এছাড়াও অর্ধেক পরিবার জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহ আগে তাদের কমপক্ষে এক বেলার খাবার বন্ধ হয়ে গেছে।

ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং প্রতিনিধি ম্যারি-এলেন ম্যাকগ্রোয়ার্থি বলেন, ‘গত তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ভয়াবহ খরার মধ্যে আফগানিস্তানে অর্থনীতির এই অবাধ পতন আকস্মিক এবং নির্মম। এ ভয়াবহ সময়ে আফগান জনগোষ্ঠীকে সহায়তায় আমরা সবকিছুই করছি।’ আফগানিস্তানের মধ্যবিত্ত শ্রেণিও খাবারের কষ্টে রয়েছে বলে সংস্থাটির জরিপে উঠে এসেছে। ডব্লিউএফপি বলছে, যেসব পরিবার প্রধানের কমপক্ষে উচ্চ-মাধ্যমিক বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা রয়েছে, এদের মধ্যে মাত্র দশ শতাংশ পরিবার প্রধান নিজের পরিবারের জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত খাবার কিনতে পারছেন। গত তিন বছরের দুই দফার ভয়াবহ খরার জেরে কম শিক্ষিত পরিবারের সদস্যরা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির শিকার। দেশটিতে ক্ষুধার এই বিস্তার নজিরবিহীন। এর মধ্য দিয়ে সংকটের ভয়াবহতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

একজন রোজগারকারী সপ্তাহে গড়ে একদিন কাজ পাচ্ছেন। ফলে মূল্যবৃদ্ধির সময়ে তাদের পর্যাপ্ত খাবার কেনা সম্ভব হচ্ছে না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০২০ সালের তুলনায় রান্নার তেলের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আবার গমের দাম বেড়েছে ২৮ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে ডব্লিউএফপি প্রতিনিধি ম্যারি বলেন, আফগানিস্তানে দুই পর্যায়ের জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার গতি বাড়িয়েছে ডব্লিউএফপি। প্রথমত, আমরা মারাত্মক ক্ষুধা এবং অপুষ্টি এড়াতে সবচেয়ে দুর্গত মানুষদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছি। আর দ্বিতীয়ত, আমরা স্থানীয় খাবার উৎপাদন এবং তা বাজারে নেয়ার সক্ষমতা বাড়াচ্ছি। এছাড়াও আফগান অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে আমরা স্বল্পমেয়াদি কাজের সুযোগ এবং পরিবারগুলোকে অর্থ পাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছি।

এদিকে আফগানিস্তানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা অবসানে জোরালো তাগিদ দিয়েছে চীন। গত বুধবার জি-২০ গ্রুপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক ভার্চুয়াল বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এ তাগিদ দেন। তিনি বলেন, আফগানিস্তানের ওপর আরোপিত বিভিন্ন একক নিষেধাজ্ঞা এবং বিধিনিষেধের যত শিগগির সম্ভব অবসান ঘটাতে হবে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার অবসান অবশ্যই ঘটাতে হবে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আফগানিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও দেশটির সম্পদ সাধারণ জনগণের জন্য ব্যবহার হতে দেয়া উচিত। এগুলো কোনোভাবেই আফগানিস্তানের ওপর রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হতে দেয়া উচিত হবে না।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ জব্দ করে ওয়াশিংটন।

এছাড়া আরো কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থাও দেশটির অর্থ আটক করেছে।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ