গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের পক্ষে এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
এদিকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া যাদের প্রায় সকলেই মুসলিম শিক্ষার্থী। তবে দেখা গেলো ব্যতিক্রম। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে এবার ফিলিস্তিনিদের পক্ষে মুসলিম শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এলিজা কালেহনবার্গ নামের এক ইহুদি ছাত্র। তার দাবি, ইসরায়েল গাজায় যেটি চালাচ্ছে, সেটি নিছকই গণহত্যা ছাড়া কিছুই না।
সম্প্রতি আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ২১ বছর বয়সী এলিজা বলেন, ইহুদীদের আলোচনায় যখন ফিলিস্তিনের বিষয়টি চলে আসে, তখন সকলেই ১৯৪৮ সালের ইতিহাস ভুলে যান; নয়তো আপনারা এটি সম্পর্কে অবগত নন। মূলত ইহুদী চর্চায় আরব কিংবা ফিলিস্তিনিদের সরাসরি বর্ণবাদী হিসেবেই উল্লেখ করা হয়।
এলিজা বলেন, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলার মানেই যে ইহুদীবিরোধী, তা নয়। যখন আমি হিব্রু স্কুলে (ইহুদীদের ধর্মীয় মক্তব) পড়ি, সেখানে অনেক ফিলিস্তিনিদের সাথেও পরিচিত হই। তাদের সম্পর্কে জেনেছি এবং যা বুঝতে পেরেছি, তা হল, ফিলিস্তিনি সংস্কৃতির সাথে আমাদের ইহুদী সংস্কৃতির যতটা মিল রয়েছে, তা আর অন্য কোনো জনগোষ্ঠীর কিংবা গোত্রের সাথে নেই।
এলিজা নামের এই ইহুদী ছাত্র আরও বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। যেমন, আমাকে রীতিমতো ইহুদীবিরোধী মনে করা হয়। কেউ 'কাপো' (ইহুদীকে ঘৃণাকারী) বলেও সম্বোধন করেন। কিন্তু এরপরও সব মেনে নেই, কারণ আমি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছি, কারণ ফিলিস্তিনিরা আমার পরিবার, তারা আমার ভাই ও বোন।
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শিক্ষার্থীদের চলমান এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। আর তা দমনে তৎপর পুলিশ প্রশাসনও। বিক্ষোভ-আন্দোলনে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আন্দোলনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৯ শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আন্দোলন শুরুর পর থেকে ক্যাম্পাসে আসা বন্ধ করে দেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদি ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ইহুদি শিক্ষার্থীদের একাংশ জানান, ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ এবং আন্দোলনকারীদের সার্বক্ষণিক অবস্থানের কারণে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে ভয় পাচ্ছেন। এরই মাঝে ব্যতিক্রম অবস্থানে দেখা গেলো ২২ বছর বয়সী ইহুদী ছাত্র এলিজা কালেহনবার্গকে।
নয়াশতাব্দী/ডিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ