মা হতে চাইছিলেন তবে এর জন্যে কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে রাজি ছিলেন না ব্রিটিশ তরুণী স্টেফনি টেলর! উপায় খুঁজছিলেন সম্পর্কহীন থেকে সন্তান ধারণের। পাচ্ছিলেন না যুৎসই কোনো উপায়। সহজ উপায় ছিল একটাই,কোনো গর্ভধারণ কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়ে সন্তান ধারণ করা। কিন্তু স্টেফনি সেই পথেও হাঁটতে চাননি। ফলে মা হতে তিনি দ্বারস্থ হন ইন্টারনেটের।

অনলাইন থেকে কিনে নেন শুক্রাণু। আর ইউটিউব দেখে শিখে নেন শুক্রাণু গর্ভে প্রবেশ করানোর পদ্ধতি। সব শেষে ই-বে থেকে কেনেন প্রজনন প্রক্রিয়ার দরকারি সব জিনিসপত্র। স্টেফনি’র যুক্তি অনলাইনে যখন সব কিছুই হচ্ছে, তখন সন্তান ধারণেই বা সমস্যা কোথায়!

স্টেফনি ভুল প্রমাণিত হননি। দশ মাস পর ফুটফুটে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। কন্যার নাম রেখেছেন ইডেন। যদিও স্টেফনির কাহিনী শুনে ইডেনের আরো একটি নাম দিয়েছেন পরিচিতরা‘ই-বেবি’।

অনলাইনে লেনদেন, কেনাকাটা বা বার্তা প্রেরণের পদ্ধতিতে ইলেকট্রনিকের অদ্যাক্ষর ‘ই’জুড়ে দেয়া হয়। স্টেফনির কাহিনী শুনেও অনেকের মনে হয়েছে এই সন্তানের জন্মের সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে অনলাইনের বিষয়-আশয়। তাই ইডেন আসলে ‘ই-সন্তান’।

তবে গর্ভধারণ কেন্দ্রে না গিয়ে হঠাৎ বাড়িতে গর্ভধারণ করেছেন কেন? স্টেফনি জানিয়েছেন, তিনি প্রথমে বিকল্পটি ভেবে দেখেননি তা নয়। বরং প্রথম দিকে বেশ কয়েকটি গর্ভধারণ কেন্দ্রে তিনি যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তাদের সন্তান ধারণ করানোর মূল্য এতটাই বেশি যে বিকল্প খুঁজতে বাধ্য হন স্টেফনি।

পাঁচ বছরের এক পুত্রসন্তানের জননী তিনি। দ্বিতীয় সন্তানের চেষ্টা করছিলেন। বিষয়টি এক বন্ধুকে জানাতে তিনিই স্টেফনিকে অনলাইনে শুক্রাণু কেনার একটি অ্যাপের সন্ধান দেন। ওই অ্যাপে শুক্রাণু দিতে ইচ্ছুক ব্যক্তির পরিবার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্ত তথ্যই পাওয়া যায়। স্টেফনি জানিয়েছেন, সেখান থেকেই নিজের সন্তানের জন্য শুক্রাণু দাতা খুঁজে নেন তিনি।

স্টেফনি চেয়েছিলেন তার সন্তান তারই মতো দেখতে হোক। তাই তিনি এমন কাউকে খুঁজছিলেন, যার শারীরিক গঠন তার সঙ্গে মেলে। একই সঙ্গে স্বভাবের দিক থেকেও পরিবারমুখী মানুষ চাইছিলেন স্টেফনি। পছন্দমতো শুক্রাণু দাতা পেতে এক দিন লাগে তার। দু’সপ্তাহের মধ্যেই শুক্রাণু পেয়ে যান স্টেফনি। আর প্রথম চেষ্টাতেই সফল হন।

স্টেফনি জানিয়েছেন, প্রথমে এ ব্যাপারে তার বাড়ির কয়েক সদস্য রাজি না হলেও ইডেনের জন্মের পর তারা খুশি। সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় সন্তানের জন্ম দিতে পেরে স্টেফনিও গর্ববোধ করছেন বলে জানিয়েছেন।

নয়া শতাব্দী/এমআর