প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন চিরসঙ্গী আফগানিস্তানের। কখনও ভূমিকম্পে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়, তো কখনও তুষারপাতে ঢেকে যায় দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। শীতকালীন বৃষ্টিপাতের জেরে দেশটিতে মার্চের শুরুতেই প্রবল তুষারপাত হয়েছে। এর জেরে বিভিন্ন জায়গায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, গত তিনদিন ধরেই আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে চলছে প্রবল তুষারপাত। এই আবহে বরফে ঢেকে গেছে রাস্তা ঘাট, বাড়ির ছাদ। এই তুষারপাতের কারণেই ১৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে টোলো নিউজের রিপোর্টে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এই তুষারপাতের জেরে দেশটির বলখ এবং ফরিয়াব প্রদেশে বহু গবাদি পশুর মৃত্যু হচ্ছে। খাদ্যের অভাব এবং প্রবল ঠান্ডার জেরে এই দুই প্রদেশ মিলিয়ে অন্তত ১০ হাজার গবাদি পশু প্রাণ হারিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।
আর এর জেরে পড়েছে সেখানকার সাধারণ মানুষের মাথায় হাত। কেননা, এই গবাদি পশুর ওপর নির্ভর করেই সারা বছরের আয়, খাদ্য সংস্থান করতো তারা।
এদিকে প্রবল তুষারপাতের জেরে বহু জায়গায় রাস্তাঘাট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় খাবারদাবার বা অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী এসে পৌঁছাতে পারছে না সেখানে। এর জেরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অনেক জায়গায় বরফের জেরে বাড়ির দরজা পর্যন্ত আটকে যাচ্ছে। আর এমন পরিস্থিতিতে নিজেরাই কোদাল নিয়ে বরফ সরানোর কাজে নেমেছেন অনেকে।
অন্যদিকে কয়েকটি প্রদেশে রাস্তায় জমে যাওয়া বরফ সরাতে বা পুনরায় যোগযোগ স্থাপন করার ক্ষেত্রে প্রশাসন ততটা তৎপর নয় বলে অভিযোগ উঠছে।
তবে এ নিয়ে কয়েকজন মন্ত্রীর সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে তালিবান সরকার। এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মোকাবিলার জন্য পথ বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয়ছে এই কমিটিকে।
এ বিষয়ে তালিবান মুখপাত্র মিসবাহউদ্দিন মুস্তায়িন বলেছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিটি প্রদেশে আলাদা আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রশাসন খুব দ্রুত সব রাস্তা থেকে বরফ সরানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। তুষারপাতের জন্য যারা আটকে পড়েছেন, তাদের উদ্ধারেও দল পাঠানো হচ্ছে।
আফগানিস্তানে প্রবল এই তুষারপাতে সলং পাস বন্ধ হয়ে গেছে। এর জেরে ঘোর, বদঘিস, গজনি, হেরাত, বামিয়ানের মতো প্রদেশের সঙ্গ সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এই আবহে প্রত্যন্ত এলাকায় থাকা মানুষজন আরও সমস্যায় পড়েছেন। সূত্র- এএফপি
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ