ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পাকিস্তানে নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া কতদূর?

প্রকাশনার সময়: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:০০

পাকিস্তানে নির্বাচনের ১০ দিন পরও দেশটির নতুন সরকার গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। এই নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই নিত্যনতুন খবর আছে। ভোটের দিন পর দেয়া হয়েছে ফল। সেখানে কোন দলই সংখ্যগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

অন্যদিকে দল হিসাবে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে নওয়াজ শরীফের দল পিএলএম-এন। তাদের পরেই আছে বিলওয়াল ভুট্টোর পিপিপি। এই দুই দল জোট সরকার গঠনের উদ্যেগ নিলেও তাকে এখন ঐক্যমত্য হয়নি। ফলে দেশটির রাজনীতিতে এখন ধরনের জগাখিচুড়ি অবস্থা।

সরকার গঠনে পিএমএল-এন ও পিপিপি বেশ কয়েক দফা বৈঠকে বসলেও, কাজের কাজ হয়নি। কিভাবে ক্ষমতা ভাগাভাগি হবে, এনিয়ে কিছুতেই আপোষ রফায় পৌঁছাতে পারছেন না শরীফ গং এবং বিলওয়াল। যদিও দুই পক্ষই দাবি করে আসছেন, তাদের মধ্যে আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

তবে, সেই সবের মধ্যে কতুটুক আলো আর কতটুকু চনা, সেটি পরিস্কার করেনি দু’পক্ষ। কারণ, শনিবার দুই পক্ষের মধ্যে তৃতীয় বৈঠকটিও ছিলো নিস্ফলা। উভয়ই ক্ষমতা ভাগাভাগির ফর্মুলা চূড়ান্ত করতে আবারও বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি সোমবার হবার কথা রয়েছে।

পাকিস্তানের দ্য ডন পত্রিকা জানিয়েছে, দুই দলের প্রতিনিধিরা ‘গিভ এন্ড টেক’ নিয়ে নিজেদের প্রস্তাবগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে বেশি সময় নেয়ার চেষ্টা করছে। পিএমএল-এন-কে সরকার গঠনে সমর্থন দেয়ার কথা জানিয়ে কোন মন্ত্রিত্ব না চাইলেও স্পিকার ও প্রেসিডেন্ট পদটি চেয়েছে পিপিপি।

কিন্তু এতে সায় দিচ্ছে না শরীফ গং। পিপিপি মনে করে, এই না চাওয়ার পেছনে নওয়াজের বদ মতলব আছে। ফলে তারাও গো ধরে আছে, পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই সাংবিধানিক শীর্ষ পদে ছাড় দিতে নারাজ তারা। এনিয়ে কোন আপোষেও যাবে না তারা। এমনটি হলে বড় ধরনের চমক অপেক্ষা করছে পাকিস্তানের রাজনীতিতে।

এদিকে, কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দেশটিতে সরকার গঠন করবে বলে জানিয়েছে। রোববার পিটিআই মনোনীত প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ওমর আইয়ুব খান বলেন, কেন্দ্র ও প্রদেশে সরকার গঠন করবে পিটিআই। দেশের জনগণ ইমরান খানকে চায়। জনগণের ম্যান্ডেট মেনে নিতে দেশটির অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানিয়ে আইয়ুব খান বলেন, এই দলগুলো ৪০টি আসনও জিততে পারেনি। তাদের এবং অন্য সবাইকে জনগণের কথা শুনতে হবে। দেশের জনগণ ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মেনে নিয়েছে এবং তারা সুন্দর পাকিস্তান চায়।

তিনি বলেন, দেশের তিন কোটি মানুষ পিটিআই ও ইমরান খানকে ভোট দিয়েছে। কারণ তারাই পাকিস্তানকে এই মন্দা থেকে বের করে সঠিক পথে আনতে সক্ষম। ইমরান খান এর আগে যা বলেছিলেন, এখন সবাই তাই বলছেন। এবার পিএমএল-এন ও পিপিপি- কে কে একে অপরের পিঠে ছুরি চালায়, তার অপেক্ষায় জাতি।

জেলে বসেই খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছেন ইমরান খান। দুই দিন আগেও বিরোধী দলে বসার কথা জানালেও, এখন হিসাব বদলে গেছে। ইমরানের সঙ্গে আদিয়ালা জেলে দেখা করেছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। সেখানেই চুক্তি হয়েছে। সবজু সংকেত এসেছে এগিয়ে যাবার, যার কারণে পাল্টে গেছে পিটিআই-এর সূর।

রাজনীতিতে যে শেষ কথা নেই, তার যেন জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত দেশটির নতুন সরকার নিয়ে কি হয়, তা দেখার অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি ২৯ ফেব্রুয়ারির আগে জাতীয় পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশন আহবান করবেন, যাতে আইন প্রণেতারা শপথ নিতে পারেন। পরে সংসদ নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবে৷

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ