ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইমরানসহ কারাবন্দি সব নেতাকর্মীর মুক্তি চায় পিটিআই

প্রকাশনার সময়: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৩২

পাকিস্তানে সদ্য শেষ হওয়া পার্লামেন্ট নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) দলের শীর্ষ নেতা ইমরান খান ও দলের কারাবন্দি সব নেতাকর্মীর মুক্তি চেয়েছে। পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহর খান এই দাবি জানিয়েছেন।

সৌদিভিত্তিক দৈনিক আরব নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গহর খান আরও বলেছেন, দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুষ্টু রাখতে হলে অবশ্যই বিজয়ী ‘পিটিআই-স্বতন্ত্র’ প্রার্থীদের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পরিবর্তে দলীয় প্রার্থীর সম্মান দিতে হবে। সাক্ষাৎকারে ব্যারিস্টার গহর খান বলেন, ‘আমি সেনাপ্রধানের বক্তব্যের সূত্র ধরেই বলছি, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের কারাগারে বন্দি রেখে স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব নয়। জাতি এখন স্থিতিশীল রাজনীতির আরোগ্য স্পর্শ চায় এবং তার স্বার্থেই পিটিআই আমাদের শীর্ষ নেতা ইমরান খান ও কারাবন্দি পিটিআই নেতা-কর্মীদের মুক্তি চাইছি।’

অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় জর্জরিত পাকিস্তানে গত ৮ নভেম্বর পার্লামেন্ট ও প্রাদেশিক আইনসভাগুলোর নির্বাচন হয়েছে। তবে তাতে কেটে যাওয়ার পরিবর্তে আরও ঘনীভূত হয়েছে সংকট।

কারণ পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মোট আসনসংখ্যা ২৬৬টি। কোনো দল এককভাবে সরকার গঠন করতে চাইলে সেই দলকে অন্তত ১৩৪টি আসনে জয়ী হতে হবে।

কিন্তু নির্বাচনের যে ফলাফল এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি—১০১টি আসনে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। বিজয়ী এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে পিটিআই-স্বতন্ত্ররা জিতেছেন ৯৬টি আসনে। এছাড়া ৭৫টি আসনে জিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন), ৫৪ আসনে জিতে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। এছাড়া করাচিভিত্তিক মুত্তাহিদা কওমী মুভমেন্ট জয়ী হয়েছে ১৭টি আসনে।

অর্থাৎ কোনো দলই এককভাবে সরকার গঠন করার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। এখন একমাত্র সমাধান জোট সরকার গঠন, কিন্তু সেখানেও নানা ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছে না দলগুলো।

এই পরিস্থিতিতে শনিবার একটি বিবৃতি দিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির। বিবৃতিতে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে সমঝোতায় আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতি এক নৈরাজ্যময় মেরুকরণের রাজনীতিতে বন্দি হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে এখন প্রয়োজন স্থিতিশীল রাজনীতির আরোগ্য স্পর্শ।’

পরের দিন রোববার আরব নিউজকে সাক্ষাৎকার দেন পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহর খান। সাক্ষাৎকারে জোট সরকার ইস্যুতে পিটিআইয়ের অবস্থান প্রসঙ্গেও প্রশ্ন করা হয় তাকে। তবে এ ইস্যুতে সরাসরি কোনো জবাব না দিয়ে গহর খান বলেন, ‘জোট সরকার গঠনের ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি দলকে অবশ্যই একটি ব্যাপারে একমত হতে হয়; আর সেটি হলো— জনগণ যাদেরকে ভোট দিয়েছে, তাদেরকে যথাযথ সম্মান জানানো।’

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) ও আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে পিটিাআই প্রার্থীরা তাদের দলীয় প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য ইসিপির বরাদ্দ বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে তাদের।

পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী যদি কোনো আসন থেকে ভোটে বিজয়ী হন— তাহলে ফলাফল প্রকাশের ৩ দিনের মধ্যে তাকে কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে হবে, না হলে বাতিল হয়ে যাবে ওই আসনের ফলাফল। এ কারণে এই মুহূর্তে পিটিআইয়ের অনেক বিজয়ী প্রার্থী খানিকটা দুশ্চিন্তায় আছেন। কয়েক জন ইতোমধ্যে পিএমএলএনে যোগও দিয়ে ফেলেছেন।

তবে পিটিআইয়ের ভাষ্য, নিজেদের প্রতীক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় পিটিআই প্রার্থীরা বাধ্য হয়ে স্বতন্ত্র প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাই তাদের ক্ষেত্রে সংবিধানের এই ধারা কার্যকর হবে কি না— তা প্রশ্নসাপেক্ষ।‘আমরা প্রয়োজনে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হবো,’ আরব নিউজকে বলেন ব্যারিস্টার গহর খান।

সূত্র : জিও নিউজ, আরব নিউজ

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ