ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

যে গ্রামে শুধু নারীদের বসবাস!

প্রকাশনার সময়: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৪৮

একটা গ্রামে সাধারণত বিভিন্ন শ্রেণীপেশার নারী পুরুষ বসবাস করে থাকেন। কিন্তু এমনও গ্রাম আছে, যেখানে শুধুই নারীদের বসবাস! বিস্ময়কর হলেও সত্যি যে, বিশেষ ওই গ্রামে নেই কোনো পুরুষের উপস্থিতি। এমনকি পুরুষদের সেই গ্রামে প্রবেশ নিয়েও রয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। শুধু তাই নয়, ওই গ্রামে বসবাসরত কোনো নারী যদি কোনো পুরুষের সাথে সম্পর্ক রাখেন, তাহলে তাকে ভোগ করতে হয় কঠিন শাস্তি। বলছি মিশরের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের 'আল সামাহা' গ্রামের কথা।

আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিনভিত্তিক গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালাকপ্রাপ্ত বা বিধবা নারীদের অভয়ারণ্য আল সামাহা গ্রামটি। মূলত মিশর সরকার গ্রামটিকে বরাদ্দ করেছে বৃদ্ধা, বিধবা ও তালাকপ্রাপ্ত নারীদের জন্য। প্রত্যন্ত এই গ্রামে পুরুষদের পাশাপাশি সর্বসাধারণের বসবাসেরও অনুমতি নেই। এমনকি বিবাহিত এবং অবিবাহিত মহিলাদেরও প্রবেশ নিষেধ সেখানে।

গ্রামটির অবস্থান রাজধানী শহর কায়রো থেকে প্রায় সাড়ে ১২শ কিলোমিটার দূরে ইদফো নামক শহরের প্রত্যন্ত এলাকায়। গ্রামটির চারপাশে রয়েছে কৃষিভূমি। পশু-পাখি পালন ও চাষাবাষ করে জীবন ধারণ করেন এখানকার নারীরা।

গ্রামটিতে ৩০৩টি পরিবারে শুধু নারী ও মেয়ে শিশুর বাস। প্রত্যেক নারীকে একটি করে বাড়ি ও এক খণ্ড করে জমি বরাদ্দ দিয়েছে মিশর সরকার। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রকল্প ও সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের গৃহসামগ্রী ও কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হয়। তাদের স্বল্পমেয়াদি ঋণও দেয়া হয় কৃষিকাজের জন্য। কিন্তু গ্রামটি রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে দেশটির সরকারের অবহেলার অভিযোগ রয়েছে।

মিশরের কৃষি মন্ত্রণালয় সরকার এ সকল নারীদের জন্য কৃষিভিত্তিক জীবিকা নির্বাহের সুবিধায় তাদের জমি প্রদান করে থাকে। তবে সেই জমির সম্পূর্ন মালিকানা পেতে অন্তত ১৫ বছর স্থায়ীভাবে বসবাস করতে হয় এখানকার বাসিন্দাদের।

যদিও সরকার সামাহা গ্রামে থাকা এসব নারীদের যাদের একতলা বাড়ি রয়েছে, তাদের জন্য ভর্তুকি দিয়েছে। পাশাপাশি তাদের ক্ষুদ্র ঋণ পরিশোধ করে দিচ্ছে।

তবে এ সকল সুবিধা থেকে তারা তখনই বঞ্চিত হবের এবং তাদের গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হবে যখন তারা গ্রামে বসবাসের শর্ত লঙ্ঘন হিসেবে কোনো পুরুষের সাথে সম্পর্ক রাখেন।

তবে অভিযোগ রয়েছে, সরকারি অবহেলায় ওই গ্রামটিতে বিশুদ্ধ পানীয় জল, স্বাস্থ্যসেবা, স্যানিটেশন এবং পরিবহন ও শিক্ষার অভাব রয়েছে। ফলে গ্রামটি নারীদের এক ধরনের নির্বাসনে ঠেলে দিয়েছে; তারা এখন সুযোগ পেলেই পালাতে চাইছে। নয়াশতাব্দী/ডিএ/একে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ