স্বেচ্ছায় মৃত্যুকে বরণ করেছেন দুরারোগ্যে আক্রান্ত ডাচ তরুণী লরেন হোভ। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) মাত্র ২৮ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এর আগে, সামাজিক মাধ্যমে এক আগামবার্তা হিসেবে নিজের মৃত্যুবরণের তারিখ ও সময় জানিয়ে দেন তিনি।
আর মৃত্যুবরণের ঠিক দুদিন আগে, এক আবেগঘন বার্তায় নিজের মৃত্যুর খবর জানিয়ে দেন নেদারল্যান্ডসের এই তরুণী।
গত ২৪ জানুয়ারি নিজস্ব ব্লগ ‘ব্রেইন ফগে’ তিনি লেখেন, ‘আমার শেষ দিন হবে শনিবার। আগামী ২৭ জানুয়ারি আমি মৃত্যুবরণ করতে যাচ্ছি। এদিন দুপুর ১টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে আমার মৃত্যু হবে। স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অসুস্থতার জন্য যারা আমাকে শুভ কামনা জানিয়েছিলেন; তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
মৃত্যুকে একটা ভ্রমণ উল্লেখ করে লরেন হোভ লেখেন, ‘আশা করি আমি একটি ভ্রমণে যাচ্ছি। আমি মনে করি, আমি জন্মের আগে যা ছিলাম সেই পরিস্থিতিতে ফিরে যাচ্ছি। যার কোনো অস্তিত্ব নেই, অনুভূতি নেই, কেবল চূড়ান্ত শান্তি।’
এরপর ডাচ তরুণী আরও লেখেন, ‘আমি আমার মৃত্যুর দিন ও সময় প্রকাশ করেছি। কারণ আপনারা সবাই এই মুহূর্তের জন্য আমার সঙ্গে উদ্দীপ্ত হয়ে আছেন। চাইলে আমার জন্য একটি মোমবাতি জ্বালাতে পারেন।’
মৃত্যুর দিন ২৭ জানুয়ারি সামাজিক মাধ্যম এক্সে একটি ছবি প্রকাশ করে লরেন হোভ লেখেন, ‘এটি হবে আমার শেষ টুইট। ভালোবাসাসহ সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ। আমি এখন কিছুটা বিশ্রাম নেব এবং প্রিয় মানুষদের সঙ্গে থাকব। আমার কাছ থেকে একটি শেষ মিম উপভোগ করুন।’
মায়ালজিক এনসেফালোমাইলাইটিস (এমই) এবং ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোমে (সিএফএস) নামে একটি বিরল রোগে আক্রান্ত ছিলেন লরেন হোভ। এটি এমন এক জটিল ব্যাধি, যা রোগীকে গুরুতর অলসতা ও ক্লান্তিতে রাখে। এটি বিশ্রামের পরেও অব্যাহত থাকে এবং এর কোনো চিকিৎসা নেই।
তাই লরেন হোভ ২০২২ সালে স্বেচ্ছায় মৃত্যুর জন্য আবেদন জানান সরকারের কাছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর তার সেই আবেদনে সাড়া দেয় ডাচ সরকার। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে তার স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণের প্রক্রিয়াও পিছিয়ে যায়।
তারই জেরে, বাবা-মায়ের উপস্থিতিতে ২৭ জানুয়ারি দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেন লরেন হোভ।
নয়াশতাব্দী/ডিএ/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ