ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

যে গ্রামে এখনও টিকে আছে যিশু খ্রিস্টের ভাষা

প্রকাশনার সময়: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:১১ | আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:৪০

সিরিয়ার নাম এলেই যুদ্ধ, হানাহানি এবং নাশকতার চিত্রই সামনে আসে। বিগত কয়েক দশক ধরে যুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ার ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষ করে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের কাছে। কারণ হিংসাদীর্ণ সিরিয়ার বুকেই এমন একটি গ্রাম রয়েছে, যেখানে আজও যিশু খ্রিষ্টের ভাষা আরামেইকে কথা বলেন মানুষ।

সিরিয়ার ওই গ্রামের নাম মালুলা ওই গ্রামের পরিবেশ বর্তমানে মূলত রুক্ষ। দামাস্কাসের সঙ্গে সংযোগ বলতে ভাঙাচোরা একটি রাস্তা। বাসে চেপে, পাহাড় পেরিয়ে যেতে হয়। মালুলা একসময় খ্রিষ্টান অধ্যুষিত ছিল। পশ্চিম এশিয়ায় একসময় যে বৈচিত্র্যের সংস্কৃতি ছিল, সেই অনুযায়ী ওই গ্রামেও বিভিন্ন ধর্মের মানুষের বসবাস ছিল। পরে ইসলাম আধিপত্য বিস্তার করে।

মালুলার আশপাশের গ্রামগুলোতে অতি অল্পসংখ্যক মানুষের বসবাস। সেখানকার বাসিন্দারাও আরামেইক ভাষাতেই কথা বলেন। সিরিয়া একটি বহুভাষী দেশ, তার মধ্যে যিশু খ্রিস্টের ভাষায় কথা বলা মানুষ আজও রয়েছেন।

তবে যারা আরামেইক ভাষায় কথা বলেন তাদের আশঙ্কা, এখনও প্রচলিত থাকলেও তাদের ভাষা বিলুপ্ত হতে চলেছে। একসময় সিরিয়া, তুরস্ক ও ইরাকে আরামেইক ভাষার প্রচলন ছিল। কিন্তু ধর্মান্তরণ ও পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে ভাষাটি বিলুপ্ত হওয়ার পথে।

গত কয়েক দশকে প্রাণ বাঁচাতে সিরিয়া থেকে বহু খ্রিষ্টান মানুষ পালিয়ে গেছেন। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপক ইয়োনা সবর জানিয়েছেন, জাবাদিন এবং বাখাতেও আরামেইক ভাষার প্রচলন ছিল। এখন যে গুটিকয়েক পরিবার রয়েছে, তারা ভাষাটিকে ধরে রেখেছে।

দুই সহস্রাব্দ আগে উত্তর ইসরায়েল ও দক্ষিণ লেবাননের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থিত গ্যালিলিতে যিশু খ্রিষ্ট আরামেইক ভাষাতেই কথা বলতেন বলে মত গবেষকদের। তার শিষ্য ও অনুগামীরাও ওই ভাষাতেই কথা বলতেন।

মালুলার বাসিন্দারা আরামেইক ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় গির্জায় প্রার্থনায় অংশ নেয় ছোট ছোট মেয়েরা। আরামেইক ভাষাতেই তারা প্রার্থনা করে। আরামেইক ভাষায় পুস্তিকা বিলি থেকে পর্যটকদেরও বিলুপ্তপ্রায় ভাষাটির সঙ্গে পরিচয় করানো হয়।

হলিউডের ‘দ্য প্যাশন অব ক্রাইস্ট’ ছবিতেও আরামেইক ভাষা ব্যবহার করা হয়েছিল। স্থানীয়রা সেই ছবি দেখলেও উপভাষার মিশেলে তা ঠিকঠাক বোধগম্য হয়নি অনেকেরই। কয়েক শতকে ভাষাটির রূপান্তরও ঘটেছে। শব্দভাণ্ডারে মিশে গেছে সিরিয়ায় ব্যবহৃত আরবি। যদিও মূল ভাষাকে ধরে রাখতে মরিয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ।

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ