অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গণহত্যার বিষয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা মামলায় রুল জারি করেছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে শুনানি শেষে এ রুল জারি করা হয়।
এতে গাজায় গণহত্যা বন্ধে সম্ভাব্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইসরায়েলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আইসিজের এই আদেশকে স্বাগত জানিয়ে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী রিয়াদ মালিকি বিবৃতিতে বলেছেন, আইসিজের এই আদেশকে স্বাগত জানিয়েছি এবং কোনও রাষ্ট্রই যে আইনের ঊর্ধ্বে নয়- এটা তারই একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ অনুস্মারক’ হয়ে থাকবে। এটি ইসরায়েলের অপরাধপ্রবণতা এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতিকে ভেঙে দিয়েছে, যা ফিলিস্তিনে কয়েক দশক ধরে দখলদারিত্ব, হামলা, নিপীড়ন এবং বর্ণবৈষম্যকে চিহ্নিত করেছে।
এদিন আইসিজে ইসরায়েলকে যেসব অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছেন:
১. গণহত্যামূলক বলে বিবেচিত হতে পারে এমন যেকোনো কাজ প্রতিরোধে ইসরায়েলকে অবশ্যই সব ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা করা, শারীরিক ক্ষতি ঘটানো, কোনো গোষ্ঠীর ধ্বংস ঘটাতে পরিকল্পিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, জন্ম রোধ করা ইত্যাদি গণহত্যামূলক কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে।
২. ইসরায়েলকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, তাদের সামরিক বাহিনী কোনো গণহত্যামূলক কাজ করবে না।৩. গাজায় গণহত্যার জন্য উসকানি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে— এমন যেকোনো প্রকাশ্য মন্তব্যে ইসরায়েলকে অবশ্যই প্রতিরোধ ও শাস্তি আওতায় আনতে হবে।
৪. মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে ইসরায়েলকে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. গণহত্যার মামলার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে এমন প্রমাণের ধ্বংস ইসরায়েলকে অবশ্যই প্রতিরোধ করতে হবে।
৬. ইসরায়েলকে এই আদেশ প্রদানের এক মাসের মধ্যে আদালতে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
৭. আদালত হামাসের হাতে জিম্মিদের ভাগ্য নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তাদের অবিলম্বে মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
গাজায় গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৬ হাজার ৮৩ জন নিহত এবং ৬৪ হাজার ৪৮৭ জন আহত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরো হাজার হাজার নিখোঁজ রয়েছে, যাদের অধিকাংশই মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় ‘অন্যান্য যুদ্ধের মতোই যুদ্ধ’ করছে। আন্তর্জাতিক আইন মেনেই ইসরায়েল নিজেকে এবং তার নাগরিকদের রক্ষা করবে।
অন্যদিকে হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি আন্তর্জাতিক আদালতের এই সিদ্ধান্তকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে অভিহিত করেছেন, যা ইসরায়েলকে বিচ্ছিন্ন করতে এবং গাজায় তাদের অপরাধ প্রকাশে অবদান রাখে।
তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘আদালতের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আমরা দখলদার ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করার আহ্বান জানাই’।
সূত্র- আল জাজিরা।
নয়া শতাব্দী/এআই/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ