ঢাকা, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জন্মের সময় বিক্রি হয়েছিল জমজ, ১৯ বছর পর দেখা

প্রকাশনার সময়: ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:০৫

অ্যামি এবং আনো, জমজ দুই বোন। যাদের দুজনকে জন্মের সময় পৃথক দুটি পরিবারের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। এর মাঝে কেটে যায় ১৯ বছর। কাকতালীয়ভাবে পুনর্মিলনের ঘটনা ঘটে এই জমজ সহদোরের। অবিশ্বাস্য এ ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ জর্জিয়ায়।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৫ সালে জন্ম নেওয়া এই দুই জমজ বোন দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে পরস্পর বিচ্ছিন্ন ছিল। পরে একটি টিভি ট্যালেন্ট শো ও একটি টিকটক ভিডিওর মাধ্যমে একে অপরকে খুঁজে পেয়েছেন তারা।

অ্যামি জানান, ১২ বছর বয়সে প্রথম তিনি অ্যানোকে দেখেছিলেন টেলিভিশন রিয়েলিটি শো‘জর্জিয়াস গট ট্যালেন্ট’ নামে একটি অনুষ্ঠানে। ওই অনুষ্ঠানে ঠিক তার মতো হুবহু দেখতে এক কিশোরীকে নাচতে দেখে সে। এ সময় অ্যামি তার পালিত মা’কে বিষয়টি জানায়। কিন্তু তার মা বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলে সেই ঘটনা ওখানেই চাপা পড়ে যায়।

এই ঘটনার সাত বছর পর ঘটে আরও একটি ঘটনা। ২০২১ সালের নভেম্বরে অ্যামি দেখতে পান, তার মতোই দেখতে নীল চুলের এক মেয়ে টিকটকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। এরপর অ্যামি কৌতুহলী হয়ে তার প্রোফাইলে গিয়ে জানতে পারেন, মেয়েটির নাম আনো সার্তানিয়া। তিনি থাকেন ৩২০ কিলোমিটার দূরের শহর তিবিলিসিতে। কিন্তু কিছুতেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না অ্যামি। পরে একটি বিশ্বিবদ্যালয়ের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে তিনি ভিডিওটি পোস্ট করেন এবং জানতে চান, এই মেয়েটিকে কেউ চেনেন কি না! সেখানে একজন সাড়া দেন, যিনি ভিডিওর মেয়েটিকে চেনেন। পরে তার মাধ্যমে যোগাযোগ হয় আনোর সঙ্গে। এভাবেই দুই জমজ বোন পরস্পরকে খুঁজে পান।

অ্যামি ও আনোর জন্ম হয়েছিল জর্জিয়ার একটি হাসপাতালে। তাদের জন্মের পর জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে কোমায় চলে যান তাদের মা আজা শেনি। কিছু দিন চিকিৎসার পর চিকিৎসকেরা তার পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আশা ছেড়ে দেন। এক পর্যায়ে ভীষণ বিপাকে পড়েন অ্যামি-আনোর বাবা। সদ্যজাত দুই শিশুকে কিভাবে বড় করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না তিনি। নিরুপায় হয়ে দুই কন্যাকে পৃথক দুটি পরিবারের কাছে বিক্রি করে দেন তাদের বাবা। সেই থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পরস্পর থেকে।

অ্যামি–আনো জানান, তারা পরবর্তীতে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছেন, তারা সত্যিকার জমজ বোন। তারা তাদের বাবাকে আর খুঁজে বের করার চেষ্টা করেননি। তাদের ভাষ্য, যে বাবা তাদের বিক্রি করে দিতে পারেন সেই বাবার সঙ্গে তারা দেখা করতে চান না।

তবে তারা তাদের জন্মদাত্রী মা আজার সঙ্গে লাইপজিগের একটি হোটেলে দেখা করেন। তখন আজা তাদের জানান, অ্যামি–আনোর জন্মের পর তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। পরে সুস্থ হয়ে সন্তানদের খুঁজলে হাসপাতালের কর্মীরা বলেছিল, তারা জন্মের পরপরই মারা গেছে।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ জর্জিয়ার হাসপাতালগুলো থেকে শিশু চুরি হওয়া বা জন্মের পরপরই শিশুদের বিক্রি করে দেওয়া খুব সাধারণ ঘটনা। গত কয়েক দশক ধরেই এমনটি ঘটছে। অ্যামি এবং আনোর ভাগ্যেও ঘটেছিল এমন ঘটনা।

নয়াশতাব্দী/ডিএ/একে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ