মিয়ানমারের জান্তা-নিয়ন্ত্রিত সুপ্রিম কোর্ট ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত অং সান সু চির পারিবারিক বাড়ি বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন। ক্ষমতাচ্যুত এ নেতার কারাবাসের তৃতীয় বার্ষিকীর এক সপ্তাহ আগে আজ বৃহস্পতিবার রায়টি জারি করা হয়। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাবতি’ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
চলতি বছরের মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নিলামে বাড়িটির ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অং সান সু চির আইনজীবীরা এই রায়ের বিষয়ে পরামর্শ করতে এখন পর্যন্ত কারাবন্দী নেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বিভিন্ন অভিযোগে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর পর থেকে তাকে নাইপিদো কারাগারের নির্জন কক্ষে রাখা হয়েছে।
এর আগের সামরিক শাসনামলে ইয়াঙ্গুনের ওই লেকসাইড ভিলাতে অং সান সু চিকে ১৫ বছর ধরে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল। তবে সম্পত্তিটির মালিকানা নিয়ে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী সু চি এবং তাঁর প্রতিপক্ষ বড় ভাইয়ের মধ্যে কয়েক দশকের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। ২০০০ সালে সু চি গৃহবন্দী থাকাকালে বড় ভাই উ অং সান উ বাড়ির মালিকানা দাবি করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন।
ওই সময় উ অং সান উর মূল মামলাটি আদালতে খারিজ হয়েছিলেন। এরপর তিনি সম্পত্তির যৌথ মালিকানা দাবি করে নতুন আরেকটি মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালে ইয়াঙ্গুনের একটি আদালত বাড়িটির দোতলা ভবন এবং অর্ধেক জমির মালিক অং সান সু চি ও আরেকটি ভবন এবং বাকি অর্ধেক জমির মালিক তাঁর ভাইয়ের বলে রায় দেন।
এরপর ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ইউ অং সান উ সুপ্রিম কোর্টে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। আপিলে তিনি বাড়িটি নিলামে তুলতে এবং মূল্যর একটি অংশের দাবি করেন। জান্তা-নিয়ন্ত্রিত সুপ্রিম কোর্ট অবশেষে আজ তাঁর পক্ষে রায় দিয়েছেন।
ইয়াঙ্গুনের ইনিয়া লেকের তীরঘেঁষা ৫৪ ইউনিভার্সিটি অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত ঔপনিবেশিক-শৈলীর বাড়িটি মিয়ানমারের গণতন্ত্রের লড়াইয়ের জন্য একটি ঐতিহাসিক স্থান এবং জাতীয় প্রতীক। আগের সামরিক শাসনামলে তাদের হাজার হাজার মানুষ বাড়িটির ফটকে জমায়েত হতেন অং সান সু চির বক্তব্য শোনার জন্য। ওই সময় সু চি গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার পক্ষে জোরালো বক্তব্য দিতেন।
নয়া শতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ