গাজায় ইসরাইলের হামলা ১০০ দিনেরও বেশি সময় পার করেছে। হামলায় প্রতিদিনই ফিলিস্তিনিদের মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ৭ অক্টোবর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের নিহতের সংখ্যা ২৪ হাজার ৬২০ এ দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৬১ হাজার ৮৩০ জন। গাজায় যথাযথ চিকিৎসাও পাচ্ছেন না আহতরা।
হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রীর সরবরাহও বন্ধ। এর আগে অঞ্চলটির হাসপাতালগুলোতে কোনো চেতনানাশক ছাড়াই অস্ত্রোপাচারের খবর পাওয়া গেছে। এবার ওষুধের অভাবে আহতদের ক্ষতস্থানে চিকিৎসকদের লবণ ব্যবহারের খবর জানিয়েছে বাস্তুচ্যুত এক ফিলিস্তিনি।
আলজাজিরার বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাস্তুচ্যুত ইব্রাহিম বারাইকাত নামের এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার প্রয়োজনীয় কোনো উপকরণ চিকিৎসকদের কাছে নেই। বাধ্য হয়ে এখন তারা ক্ষতস্থানে অ্যান্টিসেপটিকের বদলে শুধু লবণ ব্যবহার করছেন। ১ কেজি লবণের দামও এখন ১৩ ডলার!’ ইব্রাহিম বারাইকাত আরও বলেন, ‘আমরা একটি জটিল পর্যায়ে পৌঁছেছি। আপনি কি জীবাণুমুক্ত করার কাজে লবণ ব্যবহারের কথা ভাবতে পারেন? মানুষ মারা যাচ্ছে অথচ তাদের কাছে ব্যথানাশক কোনো ওষুধও নেই।’
ইসরাইলের নির্ধারণ করে দেওয়া ‘নিরাপদ অঞ্চলগুলোতেও’ নিরাপদে নেই ফিলিস্তিনিরা। আলজাজিরার বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলের নির্ধারিত ‘নিরাপদ অঞ্চল’ রাফাহতে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় একটি বাড়িতে শিশুসহ আশ্রয় নেওয়া ১৬ জন নিহত হয়েছেন। একইদিনে দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের পূর্বে ইসরাইলের বোমা হামলায় দুজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
গাজার পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরেও হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। বুধবারের হামলায় অঞ্চলটিতে ১০ জন নিহত হয়েছেন। একইদিনে পশ্চিম তীরের দক্ষিণে নাবলুস, কালকিলিয়া এবং হেব্রন ও রামাল্লার কাছেও অভিযানের খবর পাওয়া গেছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবারও পশ্চিম তীরের উত্তরে তুলকারেমে অবস্থান করছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু ছবিতে ইসরাইলি সাঁজোয়া যানের সারি এবং সাঁজোয়া বুলডোজারসহ তুলকারেমের দিকে চলে যেতে দেখা গেছে। এদিন অঞ্চলটিতে গুলির শব্দ শোনা গেছে বলেও জানিয়েছেন বাসিন্দারা। ইসরাইলের সেনাবাহিনী শরণার্থী শিবিরের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে।
দুই সপ্তাহ আগেও ইসরাইলের আরেকটি বড় অভিযানের লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল তুলকারেম। এই অঞ্চলের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সে সময় শরণার্থী শিবির থেকে প্রায় একশ পুরুষকে আটক করা করেছিল ইসরাইলের সেনারা। তাদের চালানো বুলডোজারের গুলিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বিভিন্ন বাড়িঘরসহ তুলকারেমের প্রধান রাস্তা।
নয়াশতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ