ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলায় দুই ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছেন। তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে বন্দি ছিলেন। ইসরায়েলি হামলায় এই দুই বন্দির নিহত হওয়ার খবর জানিয়ে তাদের মরদেহের ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত দুই ইসরায়েলি বন্দির মৃতদেহ দেখিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের সশস্ত্র শাখা। সোমবার কাসাম ব্রিগেডসের প্রকাশিত ওই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, তিনজন ইসরায়েলি বন্দি ক্যামেরার সামনে কথা বলছেন, সম্ভবত চাপের মুখে।
অযাচাইকৃত এই ভিডিওর প্রথম অংশে এক নারী বন্দি ও অন্য দুজন পুরুষ বন্দি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে গাজায় হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানান। ভিডিওতে থাকা ওই নারী বন্দিকে ২৬ বছর বয়সী নোয়া আরগামানি বলে শনাক্ত করেছে ইসরায়েলি মিডিয়া।
ভিডিওর দ্বিতীয় অংশে আরগামানি বলেছেন, ‘আমাদের নিজস্ব (ইসরায়েলি) বিমান হামলার কারণে’ বন্দি অন্য দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। দুই বন্দির মৃতদেহ দেখানোর মাধ্যমে ভিডিওটি শেষ হয়। অবশ্য ভিডিওটি কখন ধারণ করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
ভিডিওটির সাথে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কাসাম ব্রিগেড বলেছে, এই দুই ব্যক্তি ‘জায়নবাদী সেনাবাহিনীর বোমা হামলায়’ নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি হামাসের সর্বশেষ ভিডিওতে থাকা পুরুষ বন্দিকে ইতাই সভিরস্কি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু পরিবারের অনুরোধ অনুযায়ী দ্বিতীয় ব্যক্তির নাম বা অন্যান্য বিবরণ দেননি তিনি।
তিনি দাবি করেন, ইতাইকে আমাদের বাহিনী গুলি করেনি। এটা হামাসের মিথ্যা কথা। যে বিল্ডিংয়ে তাদের আটকে রাখা হয়েছিল সেটি লক্ষ্যবস্তু ছিল না এবং আমাদের বাহিনী সেখানে আক্রমণ করেনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোনও স্থানে হামলা করি না যদি আমরা জানি যে, সেখানে বন্দি থাকতে পারে।’ হামাস এর আগে গত রোববার আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করে। সেখানে তিন বন্দিকে জীবিত দেখানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
হামাসের এই হামলায় নিহত হন কমপক্ষে ১২০০ ইসরায়েলি। নিহতদের প্রায় ৩০০ জন সেনাসদস্যও ছিলেন। এছাড়া সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিকসহ আরও দুই শতাধিক মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
হামাসের হাতে আটক বিপুল এসব বন্দির মুক্তি দাবি করেছে ইসরায়েল। আর এ লক্ষ্যে গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। তবে টানা তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে আগ্রাসন চালানোর পরও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে আটক থাকা বেশিরভাগ বন্দিকেই উদ্ধার করতে পারেনি ইসরায়েল। চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, এখনও ১৩৬ ইসরায়েলি হামাসের হাতে গাজায় আটক রয়েছে।
নয়াশতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ