আজভ সাগরে রাশিয়ার একটি গোয়েন্দা বিমান ও একটি উড়ন্ত কমান্ড পোস্ট ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইউক্রেন। এতে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে মস্কোর সামরিক অভিযান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গতকাল সোমবার (১৫ জানুয়ারি) ইউক্রেনীয় সেনাপ্রধান জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনি এই দাবি করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
টেলিগ্রামে ভ্যালেরি জালুঝনি বলেছেন, ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী শত্রুদের একটি দূরপাল্লার রাডার শনাক্তকরণ উড়োজাহাজ এ-৫০ এবং উড়ন্ত এয়ার কন্ট্রোল সেন্টার আইএল-২২ ভূপাতিত করেছে। তিনি লিখেছেন, আজভ সাগরে বিমানবাহিনীর অভিযানের উপযুক্ত পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের জন্য আমি কৃতজ্ঞ।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে স্বতন্ত্রভাবে ইউক্রেনীয় দাবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের জন্য লিখিত অনুরোধে সাড়া দেয়নি। ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি এ-৫০ উড়োজাহাজ দাম ৩৩০ মিলিয়ন ডলার বলে উল্লেখ করেছে। কিয়েভের বিবৃতিতে বলা হয়নি কীভাবে উড়োজাহাজটি ধ্বংস করা হয়েছে।
সোভিয়েত আমলের শেষ দিকে রাশিয়ার এ-৫০ উড়োজাহাজ ব্যবহার শুরু করে। এটি একটি বৃহদাকার উড়োজাহাজ। যা শত্রুদের উড়োজাহাজ, জাহাজ ও ক্ষেপণাস্ত্র কয়েক শ’ কিলোমিটার এলাকায় শনাক্ত করতে পারে। এতে আকাশপথে হামলার জন্য সতর্ক ব্যবস্থা রয়েছে। কয়েকজন রুশ সামরিক ব্লগার বলেছেন, এই উড়োজাহাজ ভূপাতিত হওয়া রাশিয়ার বিমানবাহিনীর জন্য বড় ক্ষতি। কারণ এমন উড়োজাহাজের সংখ্যা অল্প।
রায়বার নামের রুশ সামরিক ব্লগার বলেছেন, রাশিয়ার বিমানবাহিনী ও আকাশ প্রতিরক্ষার জন্য আরেকটি অন্ধকার দিন। এ-৫০ উড়োজাহাজের সংখ্যা বেশি নয়। এটি পরিচালনায় নিযুক্ত বিশেষজ্ঞদের সংখ্যাও বিরল। এমন উড়োজাহাজে আঘাত করা হলে ক্রুরা পালানোর সুযোগ পান না।
রুশ বিমানবাহিনীতে কতটি এ-৫০ উড়োজাহাজ রয়েছে তা অস্পষ্ট। লন্ডনভিত্তিক থিংক ট্যাংক আইআইএসএস ২০২১ সালে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছিল, রাশিয়ার ৯টি এ-৫০ উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে চারটি সংস্কারকৃত এ-৫০ইউ উড়োজাহাজ। গত বছরের শুরুতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছিল, সংস্কারকৃত এ-৫০ইউ ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে অভিযানে অংশ নিচ্ছে।
পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো এই উড়োজাহাজের নাম দিয়েছে মেইনস্টে। এটি এক সঙ্গে তিন শতাধিক লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে পারে। এটি ৮০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ ও গতিবিধি শনাক্ত করতে পারে। স্থল ও সামুদ্রিক লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে পারে ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
নয়াশতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ