খুলে দেওয়া হলো ভারতের দীর্ঘতম সেতু, যার নামকরণ করা হয়েছে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর নামে। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) ভারতীয় সময় দুপুরে ‘মুম্বাই ট্রান্স হারবার লিঙ্ক’ (এমটিএইচএল) বা অটল সেতু নামক এই সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মহারাষ্ট্রের এই সেতুটি ২১ কিলোমিটার লম্বা। সমুদ্রের ওপর নির্মিত ৬ লেনের এই সেতু দিয়ে ২১ কিলোমিটার পথ যেতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট।
বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য মুম্বাই এবং নভি মুম্বাইয়ের মধ্যে দূরত্ব কমাতে সমুদ্রের ওপর সেতুটি নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সেতুটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ১৭,৮৪০ কোটি। ১২ জানুয়ারি থেকে সেতুটি আমজনতার জন্য খুলে দেওয়া হয়। মুম্বাই থেকে নভি মুম্বাইয়ের মধ্যে সংযোগকারী এই সেতুর পরিকল্পনা চলছিল ১৯৬৩ সাল থেকে।
এদিকে অটল সেতুর ওপর যাতায়াতের জন্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে গাড়ির সর্বোচ্চ গতি। চার চাকার গাড়ি প্রতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। মোটরবাইক, অটোরিকশা, ট্র্যাক্টর উঠতে পারবে না এই সেতুতে। একইসঙ্গে সেতুতে ওঠা এবং নামার সময় গতিবেগ বেঁধে দেওয়া হয়েছে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার।
একে ভারতের পরিবহণগত কাঠামোর উন্নতিতে মাইলফলক বলেই চিহ্নিত করেন মোদি। তিনি বলেন, সেতুটি তৈরি হওয়ার ফলে শুধু দূরত্ব কমল তাই নয়, সেইসঙ্গে এই সেতুটি নভি মুম্বাই এবং মুম্বাইয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে যুক্ত করলো। পাশাপাশি মুম্বাই বন্দর এবং জওহরলাল নেহরু বন্দরকে যুক্ত করলো। মুম্বাই থেকে পুণে, গোয়া কিংবা দক্ষিণ ভারত ভ্রমণের সময়ও কমবে।
ভারতের সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগে মুম্বাই থেকে নভি মুম্বাই যেতে সময় লাগত দু’ঘণ্টা। রাস্তায় থাকত তীব্র যানজট। নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ত। দাবি করা হয়েছে, এখন থেকে মাত্র ২০ মিনিটে মুম্বাই থেকে নভি মু্ম্বাই পৌঁছনো যাবে। শুধু সময় নয়, খরচও বাঁচবে। বাঁচবে জ্বালানি।
দাবি করা হচ্ছে, সড়কপথে মুম্বাই থেকে নভি মুম্বাইয়ে একেকবার যাতায়াতে আগের তুলনায় ৫০০ টাকা কম খরচ হবে।
তবে এই সেতুতে যাতায়াতে বড় অঙ্কের টোলও দিতে হবে। একটি গাড়িকে সেতু দিয়ে একবার যেতে ২৫০ টাকা টোল দিতে হবে। ওই একই দিনে ফিরতে গেলে আরও কিছুটা বেশি টোল দিতে হবে। মহারাষ্ট্র সরকার এই প্রস্তাব পাশ করেছে।
সেতুটি নির্মাণে নিযুক্ত ছিলেন মোট ৫ হাজার ৪০৩ জন শ্রমিক। সূত্র- ভয়েস অব আমেরিকা।
নয়া শতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ