নতুন বছরের প্রথম দিনে জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে, ভবনে আগুন ধরেছে এবং রাস্তা-ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও বিভিন্ন স্থানে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৬৪ জন নিহত হয়েছেন।

বুধবার (০৩ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি, এএফপি’র প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়েছে।

ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল জাপানের মধ্যাঞ্চলীয় নোটো দ্বীপে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬। প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, বিপর্যয়ের পর জীবিতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জরুরি সেবার কর্মীরা। তারা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় তিন হাজার উদ্ধারকারী নোটো উপদ্বীপের বিভিন্ন অংশে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। হেলিকপ্টার থেকে দেখা গেছে যে, বেশ কিছু স্থানে আগুন লেগেছে। ভবন ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নোটোর উত্তর প্রান্তে অবস্থিত ওয়াজিমা শহরটি স্থলপথ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের উপকূলীয় শহর সুজুর মাসুশিরো ইজুমিয়া জানিয়েছেন, সেখানকার প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়ি সম্পূর্ণ বা প্রায় পুরোটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। লোকজনকে খাবার, পানি এবং কম্বল সরবরাহ করেছে জাপানের সামরিক বাহিনী। জাপান সরকার বলছে, ৫৭ হাজার ৩৬০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবারও বিভিন্ন স্থানে পরাঘাত (আশটার শক) অনুভূত হয়েছে। মন্ত্রিসভার প্রধান সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি লোকজনকে আরও কয়েক দফা ভূমিকম্পের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। ইশিকাওয়া নোটো উপদ্বীপের ১৫৫ কিলোমিটার (৯৬.৩ মাইল) দক্ষিণে অবস্থিত ইশিকাওয়ায় মঙ্গলবার (০২ জানুয়ারি) বিকেলে ৪ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে।

সোমবার (০১ জানুয়ারি) জাপানের প্রধান দ্বীপ হোনশুতে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই ভূমিকম্পের জেরে দেশটিতে সুনামিও আঘাত হানে। ভূমিকম্পের ১০ মিনিটের মধ্যে ইশিকাওয়ার ওয়াজিমা শহরে ১.২ মিটার (প্রায় ৪ ফুট) উচ্চতার ঢেউ আঘাত হানে।

সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত জাপানে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার একটি শক্তিশালী কম্পনসহ ১৫৫ বারের বেশি কম্পন অনুভূত হয়েছে। বেশিরভাগ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩ থেকে ৪ মাত্রার বেশি। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপকূলীয় সুজু শহরে হাজারের বেশি বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নয়া শতাব্দী/এমবি