কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর পেতে রাখা মাইনের আঘাতে একটি কার্গো জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে জাহাজের দুই ক্রু আহত হয়েছেন এবং জাহাজটি তার গতি ও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ক্ষতিগ্রস্ত এই জাহাজটি শস্য নেওয়ার জন্য ইউক্রেনের একটি বন্দরে যাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার মাইনের আঘাতে পানামার পতাকাবাহী একটি পণ্যবাহী জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, গত বুধবারের ওই বিস্ফোরণে জাহাজের দুই ক্রু আহত হয়েছেন এবং বিস্ফোরণের জেরে জাহাজটি তার গতি ও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
ইউক্রেন বলেছে, ভাইসোস নামের ওই জাহাজটি শস্য বোঝাই করতে দানিউব নদীর একটি বন্দরে যাচ্ছিল। বিবিসি বলছে, জাতিসংঘ-সমর্থিত কৃষ্ণসাগরীয় শস্য চুক্তি থেকে রাশিয়া বেরিয়ে যাওয়ার পর একতরফাভাবে ঘোষিত সামুদ্রিক করিডোর ব্যবহার করে শস্য রপ্তানি অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেন। তবে এখানেও প্রায়ই হামলার ঘটনা ঘটছে। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ ঘটনার বিষয়ে একটি ছবি প্রকাশ করেছে। যাতে বিস্ফোরণের জেরে জাহাজের ওপরের ডেকে আগুন লেগেছে বলে দেখা যায়। তবে মেরামতের জন্য এটিকে বন্দরে নিয়ে যেতে কাজ চলছে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের মাঝামাঝিতে নিজেদের শর্ত পূরণ না হওয়ায় কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। এই ঘোষণার এক বছর আগে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে এ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
চুক্তির মাধ্যমে কৃষ্ণসাগর দিয়ে নির্বিঘ্নে আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে পারত ইউক্রেনের খাদ্যশস্য। তবে চলতি বছরের ১৭ জুলাই চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর রাশিয়া সেটির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানায়। যদিও রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই বর্তমান বিশ্বের প্রধান শস্য রপ্তানিকারক দেশ।
আর এরপর কৃষ্ণসাগরে জাহাজ ঢুকলেই তাতে হামলার ইঙ্গিত দেয় রাশিয়া। চুক্তির মেয়াদ শেষের পর সেসময় দেওয়া এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইঙ্গিত দেয়, রাশিয়ার সম্মতি ছাড়া ইউক্রেনের শস্য নিতে, কৃষ্ণসাগরে যদি কোনও জাহাজ প্রবেশ করে তাহলে সেটিতে হামলা চালানো হবে। কারণ এসব জাহাজকে অস্ত্রবাহী হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
নয়াশতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ