ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনী ও হামাসের মধ্যে আবার লড়াই শুরু হয়েছে। ফলে অঞ্চলটি ভয়ঙ্কর ক্ষুধা সংকটে পড়বে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। সম্প্রতি গাজায় সাতদিন ধরে যুদ্ধবিরতি ছিল। তখন গাজায় কিছু ত্রাণসামগ্রী ঢুকেছে। তা বিতরণ করার নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে।
কিছু মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভবও হয়েছে। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, ‘দুঃখের বিষয় হলো, এ বিষয়ে যতটা এগোনো জরুরি ছিল তা হয়নি।’ ডব্লিউএফপি বলছে, ‘নতুন করে লড়াই শুরু হওয়ায় ত্রাণ বিতরণ করা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে কর্মীদের জীবন বিপন্ন হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, এর ফলে বেসামরিক সাধারণ মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। গাজায় ২০ লাখ মানুষের বেঁচে থাকার সম্বল হলো এই ত্রাণের খাদ্যশস্য।’
টানা আড়াই মাস ধরে গাজায় আকাশ ও স্থলপথে হামলা করে চলেছে ইসরায়েল। এতে করে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ওই ভূখণ্ডটিতে তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। সংকট এতোটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, ভূখণ্ডটির প্রায় ৬ লাখ মানুষ বিপর্যয়কর ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছেন। জাতিসংঘের এক রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ ‘বিপর্যয়কর ক্ষুধার’ সম্মুখীন বলে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে। আর গাজার সমগ্র জনসংখ্যাই তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সংকটে রয়েছে বলে ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) রিপোর্টে বলা হয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)-সহ জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা ও বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) তথ্য অন্তর্ভুক্ত করে আইপিসি এই রিপোর্ট প্রস্তুত করেছে। আইপিসি হচ্ছে একটি বহু-অংশীদার ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক মান অনুযায়ী ক্ষুধা সংকটের তীব্রতা এবং মাত্রা নির্ধারণ করতে তথ্য বিশ্লেষণ করে থাকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার ২৬ শতাংশ মানুষ - প্রায় ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬০০ জন লোক - তাদের খাদ্য সরবরাহ এবং সংকট মোকাবিলা করার সক্ষমতা শেষ হয়ে গেছে এবং তারা বিপর্যয়কর ক্ষুধা (আইপিসি ফেজ ৫) এবং অনাহারের সম্মুখীন হয়েছে।’ ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ম্যাককেইন বলেছেন: ‘ডব্লিউএফপি কয়েক সপ্তাহ ধরে এই আসন্ন বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করে এসেছে। দুঃখজনকভাবে আমরা নিরাপদ ও ধারাবাহিক সহায়তা সরবরাহের বিষয়ে আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি। সেখানকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ এবং গাজার কেউই অনাহার থেকে নিরাপদ নয়।’
নয়াশতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ